মমতার নির্দেশে ফিরলেন তৃণমূল সাংসদরা। —ফাইল চিত্র।
দেশ জুড়ে করোনা আতঙ্কের মধ্যেই তৃণমূল চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সংসদের অধিবেশন ছেড়ে বাংলায় ফিরে এলেন দলের সব সাংসদ। সেই সঙ্গে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে তৃণমূলের তরফে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাতে অবিলম্বে অধিবেশন বন্ধ করার আর্জি জানানো হয়েছে। সোমবার থেকে অধিবেশন শুরু হলেও, তৃণমূলের কোনও সাংসদ সেখানে উপস্থিত থাকবেন না।
দলনেত্রীর নির্দেশে সমস্ত সাংসদ ফিরে এলেও, এখনও দিল্লিতেই রয়েছেন লোকসভা এবং রাজ্যসভা তৃণমূলের দুই দলনেতা দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েন। তবে দিন কয়েক আগে বিজেপি সাংসদ দুষ্মন্ত সিংহের সঙ্গে পরিবহণ কমিটির একটি বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন ডেরেক, যাঁকে সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত বলিউড গায়িকা কণিকা কপূরের সঙ্গে সম্প্রতি একটি পার্টিতে দেখা গিয়েছিল। সেই কারণে এই মুহূর্তে দিল্লিতেই গৃহ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন ডেরেক। গুরুত্বপূর্ণ কাজে দিল্লিতে রয়েছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ওই চিঠিতে তাঁরাই স্বাক্ষর করেছেন।
ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নিজে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলেছেন। জমায়েত না করে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে যাঁরা, তাদের বিশেষ ভাবে যত্নবান হতে বলেছেন। তার পরেও এই পরিস্থিতি চলতে পারে না। তৃণমূল-কংগ্রেসের সমস্ত সাংসদকে নিজ নিজ কেন্দ্রে ফিরে যেতে বলা হয়েছে। আমাদের কিছু সাংসদ স্বেচ্ছায় গৃহ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।’’
আরও পড়ুন: দেশে মৃত্যু বেড়ে ৬, আক্রান্ত বেড়ে ৩৪১, লকডাউন বহু রাজ্যে: করোনা আপডেট এক নজরে
এ নিয়ে ফোনে আনন্দবাজার ডিজিটালকে ডেরেক বলেন, ‘‘লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশন অবিলম্বে স্থগিত করার জন্য চিঠি দিয়েছি আমরা। গত ১৪ দিন ধরেই বলে আসছি, অধিবেশন স্থগিত করা হোক। কারণ তা না হলে সরকারের কথা এবং কাজে ফারাক হয়ে যাচ্ছে। যেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, জমায়েত এডি়য়ে চলতে বলা হচ্ছে, সেখানে সংসদে প্রত্যেক দিন সাত হাজার লোকের সমাগম হচ্ছে। এটা চলতে পারে না।’’
তৃণমূলের এক সিনিয়র সাসংদও কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘এই সরকার অত্যন্ত উদ্ধত। বার বার আমরা বলছি, উপযুক্ত ব্যবস্থা নিন। সময় মতো আমাদের কথা শুনলে পরিস্থিতির এত অবনতি হত না।’’
আরও পড়ুন: ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাতিল সব রকম যাত্রিবাহী ট্রেন, বন্ধ মেট্রোও
এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও ঘোষণা হয়নি। আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত সংসদের বাজেট অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল। তবে এমন পরিস্থিতিতে তত দিন পর্যন্ত অধিবেশন চলবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। সোমবার দুপুর ২টোয় সংসদে অর্থবিল উত্থাপিত হওয়ার কথা। সেখানেই অধিবেশন মুলতুবি রাখা যায় কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হতে পারে।