—ফাইল চিত্র।
গত কয়েক দিনে দেশে সংক্রমিতের সংখ্যায় ঊর্ধ্বমুখী পরিবর্তন দেখা যায়নি। তা হলে কি শেষমেশ অতিমারির প্রকোপ ধীরে ধীরে কমছে দেশে? না, এখনই তেমন কোনও আশার বাণী শোনাতে নারাজ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক ডিরেক্টর পুনম ক্ষেত্রপাল সিংহের মতে, ঝুঁকি এখনও কাটেনি। সংক্রমণের গতি কমেছে বলে মনে হলেও এখনই অতিমারি পরিস্থিতির অবসান হতে চলেছে বলে ধরে নেওয়ার একেবারেই কোনও কারণ নেই। বরং সংক্রমণ রোধের উপায়গুলির উপর গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি পরিস্থিতি নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ করার উপরেই জোর দিয়েছেন তিনি।
গত কয়েক দিনের রীতি মেনে শনিবারও দেশে সংক্রমণের হার সামান্য কম। এ দিন স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমিত ২,৩৫,৫৩২ জন। বর্তমানে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ২০,০৪,৩৩৩। তবে শুক্রবারের তুলনায় মৃত্যু বেড়েছে। ফলে হু-র সতর্কতার রেশ টেনে চিকিৎসকেরাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ইদানীং সংক্রমণের মাত্রা সামান্য কমেছে মানেই যে ঝুঁকি কমে গিয়েছে তা একেবারেই নয়। আজ পূর্ব ভারতের পাঁচটি রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া। তাতে পশ্চিমবঙ্গও ছিল। মন্ত্রী জানিয়েছেন, করোনা এখনও শেষ হয়নি। ফলে আমাদের সতর্ক থাকতেই হবে।
এ দিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে আক্রান্তদের মধ্যে এক বিশেষ সমস্যা দেখা যাচ্ছে যা চিন্তা বাড়াচ্ছে চিকিৎসকদের। ‘আভাসকুলার নেক্রোসিস’ (এভিএন)-এর শিকার হচ্ছেন আক্রান্তদের অনেকেই। সাধারণ ভাবে যাকে ‘বোন ডেথ’ বলে ব্যাখা করা হয়ে থাকে। এটা পরিস্থিতি কেন তৈরি হচ্ছে, তা বুঝতে আক্রান্তদের নিয়ে ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর)-এর কাছে বহুমুখী গবেষণার একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছেন এমস কর্তৃপক্ষ।
কোভিডজয়ীদের মধ্যে যাঁরা শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছেন, এক বিশেষ পদ্ধতিতে পরীক্ষার পরে তাঁদের অনেকের ফুসফুসে অস্বাভাবিকতার লক্ষণ দেখা গিয়েছে বলে উঠে এল এক গবেষণায়। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, কোভিডের জেরে অনেকেরই ফুসফুসের বিশেষ ক্ষতি হয়েছে। তবে অনেক সময়েই তা সাধারণ পরীক্ষায় ধরাই পড়ছে না। তবে ‘নভেল জ়েনন গ্যাস স্ক্যান’ পদ্ধতির মাধ্যমে তা ধরা যাচ্ছে। ৩৬ জনের উপর এই পরীক্ষা চালানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।
অন্য দিকে, আইসিএমআর-এর অনুমোদন পেল ওড়িশার এক বেসরকারি সংস্থার তৈরি র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট। প্রস্ততকারকদের দাবি, করোনার একাধিক ভেরিয়েন্ট শনাক্ত করতে সক্ষম এই কিট।
সংক্রমণ-সংখ্যা খানিকটা কমতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কথা ঘোষণা করল একাধিক রাজ্য। মহারাষ্ট্রের পুণেতে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে খুলছে স্কুল। কর্নাটকের বেঙ্গালুরুতে দশম থেকে দ্বাদশের ক্লাস আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। এ বার ৩১ জানুয়ারি থেকে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির জন্য স্কুল খুলছে। পাশাপাশি ওই রাজ্যে শনিবার থেকে নৈশ কার্ফু তুলে নেওয়ারও ঘোষণা করেছে প্রশাসন। ত্রিপুরাতেও ৩১ জানুয়ারি থেকে সব শ্রেণির জন্য খুলছে স্কুলের দরজা। হরিয়ানাতেও খুলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি।