Foreign Ministry

তবলিগ-সভার তদন্তে গোয়েন্দারা, সক্রিয় বিদেশ মন্ত্রকও

নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের মাধ্যমে ওই দেশগুলির সঙ্গে সর্বোচ্চ স্তরে বিষয়টি নিয়ে কথাবার্তা বলছে সাউথ ব্লক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৫২
Share:

মসজিদ জমায়েতে উপস্থিতদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে।—ছবি পিটিআই।

মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে মসজিদ জমায়েতে ডাক দেওয়া ইসলামিক ধর্মীয় সংগঠন তবলিগি জামাত চলে এল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিদেশ মন্ত্রকের আতসকাচের নীচে। তদন্ত করে দেখা যাচ্ছে, ওই জমায়েতে যোগ দেওয়া ১০টি বিদেশি রাষ্ট্র থেকে আসা ব্যক্তিরা ভিসার অপপ্রয়োগ করেছেন। শুধু তাই নয়, এই সংগঠনটি এর আগে মালয়েশিয়া এবং পাকিস্তানে এই একই সমাবেশ করেছে। ওই দুটি দেশে ব্যাপক হারে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। ইন্দোনেশিয়ায় মার্চেই সংগঠনটির জমায়েতের কথা থাকলে তা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

Advertisement

নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের মাধ্যমে ওই দেশগুলির সঙ্গে সর্বোচ্চ স্তরে বিষয়টি নিয়ে কথাবার্তা বলছে সাউথ ব্লক। যে দেশগুলি থেকে ওই ব্যক্তিরা নিজামুদ্দিনের সমাবেশে এসেছিলেন, তার মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, জর্ডন, ইয়েমেন, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া। সূত্রের খবর, এঁদের মধ্যে বেশির ভাগই পর্যটক ভিসা নিয়ে ভারতে এসেছিলেন। কিন্তু পর্যটন নয়, ধর্মীয় সমাবেশ করাটাই তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক টুইট করে জানিয়েছে, ভিসার শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে ৯৬০ জন বিদেশি তবলিগিকে কালোতালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে তাঁদের ভিসাও। রাজ্যগুলির পুলিশ প্রধানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এখনও ওই বিদেশিরা রাজ্য থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে যেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট দেশগুলিকে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছে নয়াদিল্লি। নিজামুদ্দিনের সমাবেশে ইরান, আফগানিস্তান ও ব্রিটেন থেকে আসা আট জনকে একটি হাসপাতালে কোয়রান্টিন করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে তাঁদের পাসপোর্টও।

তদন্তে এ-ও দেখা যাচ্ছে, এই তবলিগি জামাতকে অতীতে যথেচ্ছ ভাবে ব্যবহার করেছে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। জামাত উদ দাওয়া এবং জইশ ই মহম্মদের মৌলবাদী তত্ত্ব ও আদর্শ প্রচারের কাজেও ব্যবহৃত হয়েছে তবলিগি। পূর্ব এশিয়ায় নিজেদের ভিত তৈরি করতে জইশ নেতা মাসুদ আজহার জামাতকে কাজে লাগায়। আইএসআই-এর প্রাক্তন প্রধান জাভেদ নাসির জামাতের ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

Advertisement

মালয়েশিয়াতে এই সংগঠনের অনেক সদস্য থাকলেও সম্প্রতি সে দেশে তবলিগি জামাতের জমায়েতের বিষয়টি সমালোচিত হয়েছে। সেখানে প্রায় ১৬,০০০ মানুষের সমাবেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তানেও মার্চে এদের সমাবেশের পরে করোনা সংক্রমিত হয়। পাকিস্তানের সমাবেশে যোগ দেওয়া জামাতের ৫০০ সদস্য (যাদের মধ্যে এশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তের দেশগুলির পাশাপাশি আফ্রিকার নাগরিকেরাও রয়েছেন) সে দেশের সিন্ধু প্রদেশে কোয়রান্টিনে রয়েছেন।

প্রশ্ন উঠছে, প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিতে উদাহরণগুলি থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্র কেন এঁদের এ দেশে সমাবেশ করার অনুমতি দিল? বিষয়টির মধ্যে কট্টর ইসলামের ছোঁয়া রয়েছে বলে গত কাল থেকেই প্রচার শুরু করেছে বিজেপি। একাধিক মহলের ধারণা, শাহিন বাগ বা জামিয়ার ঘটনার সঙ্গে বিষয়টিকে এক করে দেখিয়ে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের চেষ্টা হচ্ছে। নিজামুদ্দিন প্রসঙ্গে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পরে দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার বক্তব্য, ‘‘সভানেত্রী স্পষ্ট জানিয়েছেন, যা ঘটেছে, তার সঙ্গে ধর্মের যোগ নেই। যাঁরা ভিসার অপপ্রয়োগ করে এখানে এসে করোনা আবহে সমাবেশ করেছেন, তাঁদের এবং গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সেখানে তাঁরা কোন ধর্মের, সেটা দেখা উচিত নয়।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement