ফাইল চিত্র।
দেশের সার্বিক করোনা পরিস্থিতি এবং প্রশাসনিক জটিলতার কথা মনে রেখে বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকাকরণের নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়। অতিমারি নিয়ে একটি মামলার প্রেক্ষিতে আজ এই মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। মামলাটি গ্রহণ করতেও অস্বীকার করেছে শীর্ষ আদালত। আদালত মনে করে দেশে টিকাকরণের অগ্রগতি ভালই।
প্রবীণ নাগরিক, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, সমাজের দুর্বল অংশ এবং যাঁরা করোনা প্রতিষেধকের জন্য অনলাইনে নাম নথিভুক্ত করতে পারেন না— তাঁদের কথা মনে রেখে শীর্ষ আদালত বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকাপ্রদানের নির্দেশ দিক। এই মর্মে ইউথ বার অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিল। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চ ওই মামলাটি গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘প্রতিষেধক প্রদান নিয়ে ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। টিকাকরণ প্রক্রিয়া চলছে এবং আদালত তার উপর নজর রাখছে।’’
শীর্ষ আদালতের তিন সদস্যের বেঞ্চ বলেছে, ‘‘চলতি টিকাকরণ প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের মতো বৈচিত্রপূর্ণ দেশে, তাই সাধারণ নির্দেশিকা জারি করা কঠিন। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে করোনা প্রতিষেধক দেওয়ার মতো কোনও নির্দেশ আমাদের দেওয়া উচিত নয়, যা রাজ্যের প্রশাসনিক কাজকে ব্যাহত করতে পারে।’’
গত জুলাইয়ে বম্বে হাই কোর্ট মহারাষ্ট্রে সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিল প্রবীণ ও শয্যাশায়ী রোগীদের বাড়ি গিয়ে প্রতিষেধক দেওয়া সম্ভব কিনা। আজ সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। জনস্বার্থ মামলাকারীকে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে মাপকাঠি করে গোটা দেশের জন্য নির্দেশ জারি যায় না। কেউ বলতে, পারে লাদাখ আর উত্তরপ্রদেশের অবস্থা এক? অথবা গ্রাম এবং শহরের পরিকাঠামো একই?
দেশের সার্বিক করোনা সংক্রমণ ফের কিছুটা বেড়েছে। গত কাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছিল, তার থেকে আজ প্রকাশিত বুলেটিনে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ছ’হাজার বেশি। আজ সকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ৩৭ হাজার ৮৭৫ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এই নিয়ে পর পর তিন দিন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজারের নীচে রইল। গত দু’দিন দৈনিক করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর সংখ্যা তিনশোর নীচে ছিল। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬৯ জন কোভিড আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। দৈনিক মৃত্যুর হিসেবে এখনও শীর্ষে রয়েছে কেরল। গত ২৪ ঘণ্টায় ওই রাজ্যে ১৮৯ জন করোনা আক্রান্ত প্রাণ হারিয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে কেরলে সংক্রমিতের সংখ্যা ২৫ হাজার ৭৭২।