—ফাইল চিত্র।
পার্ক সার্কাসের বেসরকারি শিশু হাসপাতাল থেকে মেডিক্যাল কলেজ। সেই ন’কিলোমিটার রাস্তা যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স ন’হাজার টাকা ভাড়া চেয়েছিল। টাকা দিতে না-পারায় কোভিড আক্রান্ত শিশুকে অক্সিজেন মাস্ক খুলে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়।
কলকাতায় মাস দেড়েক আগের এই ঘটনা ব্যতিক্রম নয়। গোটা দেশেই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। পুণেতেই যেমন জুন মাসে এক কোভিড রোগীকে মাত্র সাত কিলোমিটার রাস্তা নিয়ে যাওয়ার জন্য আট হাজার টাকা ভাড়া চাওয়া হয়েছিল।
আমজনতার এই হয়রানি রুখতে আজ সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিল, কোভিড রোগীদের জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের যুক্তিসঙ্গত ভাড়া বেঁধে দিতে হবে। প্রতিটি জেলায় যাতে কোভিড রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট সংখ্যক অ্যাম্বুল্যান্স থাকে, তা-ও রাজ্য সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।
‘আর্থ’ নামের একটি অসরকারি সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করে অভিযোগ জানিয়েছে, কোভিড রোগীদের জন্য যথেষ্ট সংখ্যক অ্যাম্বুল্যান্স নেই। করোনা রোগী বলে সন্দেহ হলেই মাত্রাছাড়া অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা সুপ্রিম কোর্টে জানান, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়র) তৈরি করে রাজ্যগুলিকে পাঠিয়েছে। তা শুনে বিচারপতি অশোক ভূষণের বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, “রাজ্যগুলির জন্য এই এসওপি মেনে চলা এবং অ্যাম্বুল্যান্সের সংখ্যা বাড়ানো বাধ্যতামূলক।”
মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রের এসওপি-তে অ্যাম্বুল্যান্সের কর্মী-চালকদের কোভিড রোগীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ, পিপিই কিট, ত্রিস্তরীয় মাস্ক ব্যবহারের কথা থাকলেও অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়ার উল্লেখ নেই। বিচারপতি ভূষণ বলেন, “রাজ্য সরকারকে যুক্তিসঙ্গত ভাড়া ঠিক করতে হবে। সবাইকে সেই ভাড়ায় অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা দিতে হবে।”
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পরে অনেকেরই আশা, রোগীদের সুরাহা মিলবে। শুধু বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংস্থা নয়, বড় বড় বেসরকারি হাসপাতালগুলিও কোভিড রোগীদের থেকে বিপুল পরিমাণে ভাড়া আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় স্তরে অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও, গোটা দেশে একই রকম নীতি ছিল না। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এ বিষয়ে নির্দেশ জারি করেনি। শুধুমাত্র কোভিড রোগীদের জন্য পৃথক অ্যাম্বুল্যান্স চিহ্নিত করে রাখতে বলেছিল।