ছবি: পিটিআই।
দেশে ক্রমশ বেড়ে চলেছে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা। রোগ দমনে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি। এই পরিস্থিতিতে গোটা দেশকে পথ দেখাচ্ছে ‘ভিলওয়াড়া মডেল’। এই মডেলের প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবাও।
রাজস্থানের জয়পুর থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে ভিলওয়াড়া জেলায় ১৮ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৬ জন। ক্রমে ‘হটস্পট’ হয়ে উঠেছিল ভিলওয়াড়া। বিপদ আঁচ করে নড়েচড়ে বসে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। করোনা মোকাবিলায় গৃহীত হয় নানা পরিকল্পনা। আর তাতেই সংক্রমণের গ্রাফ নামতে থাকে। উল্লেখ্য, ৩০ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত নতুন করে সংক্রমণ ধরা পড়েছে মাত্র এক জনের! ফলে ভিলওয়াড়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ২৭। ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৭ জন। তাঁদের মধ্যে ১৩ জনকে হাসপাতাল থেকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে।
কী ভাবে মিলল এই সাফল্য?
গোড়াতেই বাকি দেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করা করা হয়েছিল ভিলওয়াড়াকে। দেশে লকডাউন ঘোষণার চার দিন আগেই ২০ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সেখানে কার্ফু জারি করে প্রশাসন। ছাড় দেওয়া হয়
অত্যাবশ্যক পণ্যে। পরে কার্ফুর মেয়াদ বাড়ানো হয় ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত। ভিলওয়াড়ার জেলাশাসক রাজেন্দ্র ভট্ট জানান, এই সময়ে প্রতিটি বাড়িতে আনাজ, ফল, দুধ এবং ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নেয় প্রশাসনই।
একইসঙ্গে ভিলওয়াড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালকে সিলও করা হয়। ওই হাসপাতালের ১৭ জন স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে সংক্রমণ দেখা গিয়েছিল। তাঁদের আইসোলেশনে পাঠানো হয়। পাশাপাশি কঠোর ভাবে ‘কনটেনমেন্ট স্ট্র্যাটেজি’ নেওয়া হয়। হাসপাতালের এক কিলোমিটার পরিধি জুড়ে কনটেনমেন্ট জ়োন ও তিন কিলোমিটার জুড়ে বাফার জ়োন তৈরি করা হয়। একই ভাবে করোনা-আক্রান্তদের বাড়ির চারপাশে কনটেনমেন্ট জ়োন ও বাফার জ়োন তৈরি করা হয়। রোগ নির্ণয়ের জন্যে বিশেষ দল তৈরি করা হয়।
একটি নির্দিষ্ট হাসপাতালকে করোনা পরীক্ষাকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ভিলওয়াড়ার প্রত্যেকেরই করোনা পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: উপাদান অমিল, কলেজে বন্ধ স্যানিটাইজ়ার তৈরি
রাজস্থানের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (স্বাস্থ্য) রোহিত কুমার সিংহের দাবি, দ্রুত কার্ফু জারি ও লকডাউন কার্যকর করাতেই গোষ্ঠী সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, শহর ও গ্রাম মিলিয়ে ভিলওয়াড়ায় মোট সাড়ে ছ’লক্ষ বাড়িতে ২৪ লক্ষ মানুষের পরীক্ষা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ২৭টি হোটেলের ১৫৪১টি ঘরে কোয়রান্টিন কেন্দ্র তৈরি করেছে। ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হস্টেলগুলিতে ১১,৬৫৯টি বেডও এ ভাবে কাজে লাগানো হয়েছে। শহর ও গ্রামাঞ্চলে এখনও কাজ করে চলেছেন ‘করোনা ক্যাপ্টেন’ ও ‘করোনা ফাইটার’।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)