—ফাইল চিত্র।
দেশে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষে পৌঁছতে সময় লাগল মাত্র তিন সপ্তাহ!
আজ টুইটারে দু’লাইনের ছড়া পোস্ট করেছেন রাহুল গাঁধী। ‘‘২০ লাখ কা আঁকড়া পার / গায়েব হ্যায় মোদী সরকার।’’ গত ১৭ জুলাই নিজেরই করা একটি টুইট এই ছড়ার সঙ্গে রিটুইট করেছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি। ওই দিন, দেশে কোভিড রোগীর সংখ্যা ১০ লক্ষ পেরোনোর দিনে রাহুল লিখেছিলেন, ‘‘এই গতিতে কোভিড ছড়ালে ১০ অগস্টের মধ্যে সংক্রমিতের সংখ্যা ২০ লক্ষ পেরিয়ে যাবে।’’ সেই ভবিষ্যদ্বাণী মিলে যেতেই আজ কেন্দ্রের সমালোচনায় টুইট করেছেন রাহুল।
আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় দেশে মোট করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা গত কালই ২০ লক্ষে পৌঁছয়। আজ সন্ধ্যায় ওই সমীক্ষা বলছে, সংখ্যাটা ২০ লক্ষ ৪০ হাজার পেরিয়েছে। সকালে দেওয়া কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী অবশ্য মোট সংক্রমণ ২০.২৭ লক্ষ। দিনভর চর্চায় রয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমণের সংখ্যা, এই প্রথম যা ৬০ হাজারের ঘর ছাড়িয়েছে (৬২,৫৩৮)। দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা অবশ্য গত কালের চেয়ে কম (৮৮৬ জন)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান বলছে, ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমিতের সংখ্যার নিরিখে গত মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার বিশ্বের শীর্ষে রয়েছে ভারত। আরও ৬২ হাজার যোগ হওয়ায় আজও সেই রেকর্ড বজায় থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। সংক্রমণের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ২.৯০ লক্ষ। ভারতে এখন গড়ে ১ লক্ষ রোগী বাড়ছে দু’দিনে। কাজেই, আর দু’-এক সপ্তাহের মধ্যেই ভারত দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসবে কি না, সেই আশঙ্কাও আজ জোরালো হয়েছে।
রাহুলের টুইট।
গত ৩০ জানুয়ারি কেরলে প্রথম করোনা সংক্রমিতের খোঁজ মিলেছিল। সেই হিসেবে সংক্রমিতের সংখ্যা ১ থেকে ২০ লক্ষে পৌঁছতে সময় লাগল ১৯০ দিন। আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষে পৌঁছয় ১৯ মে, পাঁচ লক্ষ পেরোয় জুনে। পরিসংখ্যান বলছে, সংক্রমিতের সংখ্যা জুলাইয়ের গোড়ায় ছিল প্রায় ৬ লক্ষ, ৩১ জুলাই ছিল ১৬ লক্ষ। অর্থাৎ মোট সংক্রমণের অর্ধেক— প্রায় ১০ লক্ষ রোগী বেড়েছে শুধু জুলাইয়ে।
আজকের বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক যদিও আশ্বাস দিয়ে বলেছে, নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়লে প্রথম দিকে কোভিড পজ়িটিভের সংখ্যাও বাড়বে। কিন্তু দিল্লির অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, যথাযথ পদক্ষেপ করা হলে এই সংখ্যাটাও ক্রমশ কমে আসবে। অর্থাৎ সংক্রমিতকে দ্রুত নিভৃতবাসে পাঠিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে, তাঁর সংস্পর্শে কারা এসেছিলেন, সেই নজরদারি করতে হবে। কেন্দ্র জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬,৩৯,০৪২টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এই নিয়ে পরপর চার দিন ৬ লক্ষের বেশি নমুনা পরীক্ষা হল। আরও ৪৯,৭৬৯ জন সুস্থ হওয়ায় সারা দেশে সুস্থের সংখ্যা হয়েছে ১৩.৭৮ লক্ষ। সুস্থতার হার ৬৭.৯৮ শতাংশে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: কোঝিকোড়ে নামার সময় পিছলে গিয়ে দু’টুকরো বিমান, হত অন্তত ১৭, আহত বহু
আরও পড়ুন: এক দিনে ৫২ জন মারা গেলেও রাজ্যে কমল সংক্রমণের হার
দেশে সংক্রমণের শীর্ষে থাকা মহারাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোভিড রোগী পাওয়া গিয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৩১৬ জনের। উদ্ধব ঠাকরের রাজ্যে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা এখন ৪.৭৯ লক্ষ। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে তামিলনাড়ু, অন্ধ্র, কর্নাটক। দিল্লি নেমে এসেছে পাঁচে। পশ্চিমবঙ্গ সাতে।