ছবি সংগৃহীত।
আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যেই ভারতেও প্রাণীর শরীরে করোনা প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিনের ‘প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’ বা পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়ে যাবে বলে আজ দাবি করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। এ দিন কেন্দ্র জানিয়েছে, ৩০টি দল এই মুহূর্তে করোনার প্রতিষেধক বানানোর দৌড়ে রয়েছে। যার মধ্যে কুড়িটি দল অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। তবে সব পরীক্ষা শেষ করে বাণিজ্যিক ভাবে ওই প্রতিষেধক বাজারে আসতে এখনও বছরখানেকের বেশি সময় লাগবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। বাজারে এলে প্রথমে স্বাস্থ্যকর্মী, তারপরে বয়স্ক ব্যক্তি এবং যাঁরা বিপদসীমায় রয়েছেন তাঁদের ওই প্রতিষেধক প্রথমে দেওয়া হবে। তার পরে বাকিদের।
ইতিমধ্যেই চিন, আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো দেশে মানবদেহে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধকের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয়ে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও ভারত ওই প্রতিষেধক তৈরির লড়াইয়ে পিছিয়ে নেই বলে আজ দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য বিজ্ঞান বিষয়ক উপদেষ্টা কে বিজয় রাঘবন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সাধারণত প্রতিষেধক বানাতে দশ-বারো বছর সময় লাগে। আমরা তা কমিয়ে এক বছরের মধ্যে করার চেষ্টা করছি।’’ তাঁর মতে, একটি প্রতিষেধক আবিষ্কারের পরে তা উন্নত করার কাজ চালু থাকে। সুতরাং যারা পিছিয়ে রয়েছে তাদের সামনেও সুযোগ রয়েছে। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ভাবে প্রতিষেধক তৈরির কাজ করছেন বলে দাবি করেন রাঘবন। কোনও দল সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে আবার কোনও দল বিদেশি গবেষণাগারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে। রাঘবনের মতে, একাধিক পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রতিষেধক বানানোর কাজ চলছে। বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। ওই সময়ের মধ্যে ভারতে আসা ভাইরাসের চরিত্র পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কি? রাঘবন বলেন, ‘‘জিনগত পরিবর্তন একাধিক বিষয়ের উপরে নির্ভর করে। এখনও পর্যন্ত ভাইরাসের মূল চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য একই রয়েছে। বিশেষ কোনও পরিবর্তন হয়নি।’’ কোভিড-১৯ পরীক্ষা কিটের ক্ষেত্রে প্রশ্নে ভারত আগামী এক মাসের মধ্যে স্বনির্ভর হবে বলে আজ দাবি করেছেন নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বি কে পল। তিনি জানান, ‘‘জুলাইয়ের মধ্যে ভারতে প্রতি দিন পাঁচ লক্ষ করে পরীক্ষা কিট তৈরি হবে। সে ক্ষেত্রে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করতে পারবে ভারত।’’ আজ প্যারাসিটামল ওষুধের রফতানি শুরু করার প্রশ্নে সবুজ সঙ্কেত দেয় কেন্দ্র। দেশীয় চাহিদার কথা মাথায় রেখে যা এত দিন বন্ধ ছিল।
তবে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে এ বার সরকারের উদ্বেগ বাড়িয়ে গত চব্বিশ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা প্রায় দু’শো ছুঁয়েছে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৬,৫৬৬ জন। যার ফলে মোট সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,৫৮,৩৩৩। গত এক দিনে মারা গিয়েছেন ১৯৪ জন। ফলে সব মিলিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪,৫৩১ জন।
আরও পড়ুন: দেশে মৃত ৪৫৩১, করোনায় চার রাজ্যেই সংক্রমিত লক্ষাধিক