প্রতীকী ছবি।
নামেই রেলের করোনা হাসপাতাল! সেখানে করোনা পরীক্ষার কোনও ব্যবস্থাই নেই বলে অভিযোগ। তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক রেলকর্মীর মৃত্যুর পরে ইস্টার্ন রেলওয়ে মেনস ইউনিয়নের অভিযোগ, করোনা উপসর্গ নিয়ে কেউ এলে পরীক্ষার জন্য তাঁকে বিভিন্ন হাসপাতালে ঘোরানো হচ্ছে। আশঙ্কাজনক রোগী এলে চিকিৎসা দেওয়ার পরিকাঠামো নেই।
অভিযোগ নিয়ে রেল-কর্তৃপক্ষ মুখ না-খুললেও অফিসারদের বড় অংশের বক্তব্য, উপযুক্ত পরিকাঠামো ছাড়াই চালু হয়েছে এই হাসপাতাল। তবে অনেক অফিসারের অভিযোগ, ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের অসহযোগিতাতেই এই হাল।
পণ্য পরিবহণের পাশাপাশি রেলে যাত্রী বহন শুরু হওয়ায় কর্মীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে। এই অবস্থায় হাসপাতালের বেহাল দশার কথা জেনে আতঙ্ক বাড়ছে কর্মী-আধিকারিকদের। দমদমের বাসিন্দা, পূর্ব রেলের সদর দফতর কয়লাঘাটের অফিসের হিসাব রক্ষণ বিভাগের এক কর্মী তীব্র শ্বাসকষ্টের উপসর্গ দেখা দেয়। দমদম স্টেট জেনারেল হাসপাতাল তাঁকে ভর্তি নিতে অস্বীকার করে বলে অভিযোগ। বিআর সিংহ হাসপাতালে গিয়েও ফিরে আসতে হয়। কয়েক ঘণ্টা ঘোরাঘুরির পরে রেলের কোভিড হাসপাতাল হাওড়া অর্থোপেডিকে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। অভিযোগ, সেখানে কোনও চিকিৎসা ছাড়াই পরের দিন তিনি মারা যান। মৃত্যুর শংসাপত্রে তীব্র শ্বাসকষ্টের কথা লেখা হয়েছে। কিন্তু তাঁর করোনা সংক্রমণ ছিল কি না, তা জানা সম্ভব হয়নি। করোনা উপসর্গ নিয়ে বিআর সিংহ হাসপাতালের এক নার্সকে ওখানে ভর্তি করা হয়। তাঁরও এমন ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে অভিযোগ।
অভিযোগ, এমন আপৎকালীন পরিস্থিতি সামলানোর জন্য ফুসফুস ও নেফ্রোলজির চিকিৎসকও নেই ওই হাসপাতালে। অস্থি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। কর্মী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, ‘‘এই অব্যবস্থার কথা স্বাস্থ্যকর্তাদের জানিয়েও কোনও ফল না-পেয়ে আমরা জিএমের দ্বারস্থ হয়েছি।’’ এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পূর্ব রেলের প্রিন্সিপাল চিফ মেডিক্যাল ডিরেক্টর কেসি সাহু ফোন ধরেননি, টেক্সট মেসেজেরও উত্তর দেননি।
বিক্ষোভের মুখে কয়েক দিন আগে উপসর্গ আছে, এমন রোগীদের লালারস সংগ্রহের ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু আইসিএমআরের কাছ থেকে কিটের ব্যবস্থা করা গেলেও মেলেনি বায়োকেমিস্ট্রি পরীক্ষার চিকিৎসক। কর্মী সংগঠনকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার সুনীত শর্মা।