ফাইল চিত্র।
মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহের ডাক দিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। তাঁর মতে, যে সরকার ধরে নেয়, দেশের সমস্ত মানুষ বোকা, সেই সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের বিদ্রোহ করা উচিত। টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিকে খেয়ালখুশি মতো দাম নির্ধারণ করতে দেওয়ায় মোদী সরকারকে নিশানা করলেন রাহুল গাঁধীও।
চিদম্বরমের এই ক্ষোভের কারণ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের বিবৃতি। গোটা দেশে অক্সিজেন, আইসিইউ বেড, প্রতিষেধকের হাহাকার দেখা দিলেও মঙ্গলবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, সরকার গত বছরের তুলনায় শারীরিক ও মানসিক ভাবে অনেক বেশি প্রস্তুত। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরমের মন্তব্য, “অক্সিজেন, রেমডেসিভিয়ার, প্রতিষেধকের কোনও অভাব নেই বলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মন্তব্য শুনে আমি হতবাক। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর রাজ্যেও প্রতিষেধকের অভাব নেই। সেটা শুনেও আমি হতবাক।” গত এক সপ্তাহে শুধু দিল্লিতেই অক্সিজেন, হাসপাতালে বেড, রেমডেসিভিয়ার ইঞ্জেকশন না পেয়ে বহু কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অক্সিজেনের অভাবে একের পর এক হাসপাতাল দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। চিদম্বরমের প্রশ্ন, “সব ডাক্তাররা কি মিথ্যে বলছেন? রোগীর পরিবারের লোকেরা মিথ্যে বলছেন? সমস্ত ছবি, ভিডিয়ো কি জাল?”
কেন্দ্রের পাল্টা যুক্তি, প্রধানমন্ত্রী আজও উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করে পিএম-কেয়ার্স তহবিল থেকে ১ লক্ষ পোর্টেবল অক্সিজেন যন্ত্র কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জেলা সদরের হাসপাতালগুলিতে নতুন ৫০০টি নিজস্ব অক্সিজেন উৎপাদন ব্যবস্থা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগেই ৭১৩টি অক্সিজেন উৎপাদন ব্যবস্থা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
কিন্তু বিরোধীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, কোভিডের এই সঙ্কটের মধ্যেই দিল্লির রাইসিনা হিলস থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত ২০ হাজার কোটি টাকার সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পের কাজ বন্ধ করছে না মোদী সরকার। উল্টে তাঁকে অত্যাবশ্যক প্রকল্পের তকমা দিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর বক্তব্য, সেন্ট্রাল ভিস্টা অত্যাবশ্যক নয়। অত্যাবশ্যক হল কেন্দ্রে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন সরকার। প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিকে যে ভাবে ইচ্ছেমতো প্রতিষেধকের দাম হাঁকতে দিয়ে মুনাফা করার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, এখন ভারত বায়োটেক কোভ্যাক্সিনের জন্য চড়া দাম হাঁকছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার সাধারণ মানুষের আয়করের টাকা এই সংস্থাগুলিকে প্রতিষেধক তৈরির জন্য দিয়েছে। এখন সাধারণ মানুষকেই গোটা বিশ্বে প্রতিষেধকের জন্য সর্বোচ্চ দাম দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। রাহুলের মন্তব্য, “আবার গোটা সরকারি ব্যবস্থার ব্যর্থতার ফলে মোদী-মিত্রদের মুনাফা হচ্ছে।”