Coronavirus in India

দামি ওষুধে জোর কেন, সরব সাংসদেরা

করোনার চিকিৎসায় লাগে, এমন ওষুধ বাজারে দুর্মূল্য হয়ে পড়েছে বলে গত কয়েক দিন ধরেই খবর আসছিল কেন্দ্রের কাছে।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২০ ০৩:৪৫
Share:

ছবি: এএফপি।

সস্তার ওষুধ থাকতেও কেন কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় শুধু দামি ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। স্বরাষ্ট্র ও স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তাদের উপস্থিতিতে আজ বৈঠকে সাংসদেরা বলেছেন— করোনার চিকিৎসার কাজে লাগে, এমন ওষুধের দাম কমানো হোক। এর ফলে সকলেই সুলভ চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। সূত্রের বক্তব্য, প্রয়োজনে দামি ব্র্যান্ডের ওষুধের সঙ্গে সস্তা জেনেরিক ওষুধেরও সুপারিশ করা হোক, এমন দাবিও তুলেছেন সাংসদেরা।

Advertisement

করোনার চিকিৎসায় লাগে, এমন ওষুধ বাজারে দুর্মূল্য হয়ে পড়েছে বলে গত কয়েক দিন ধরেই খবর আসছিল কেন্দ্রের কাছে। অভিযোগ আসছিল জীবনদায়ী ওষুধের কালোবাজারিরও। আজ কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মার নেতৃত্বে হওয়া স্থায়ী কমিটির বৈঠকের বিষয়বস্তু ছিল কোভিড-ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়। বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল ছিলেন। বর্তমান অবস্থা কী, রাজ্যগুলির সঙ্গে মিলে কেন্দ্র কী ভাবে করোনার বিরুদ্ধে লড়ছে, স্বরাষ্ট্রসচিব তা ব্যাখ্যা করেন।

বৈঠকে সব দলের সাংসদেরাই প্রশ্ন তোলেন, উচ্চমানের সস্তার ওষুধ থাকা সত্ত্বেও কেন দামি ব্র্যান্ডের ওষুধ ব্যবহারের সুপারিশ করা হচ্ছে? এতে তো রোগীর পরিবারের উপরে বাড়তি খরচের বোঝা চাপছে। কেন জেনেরিক ওষুধ ব্যবহারে জোর দেওয়া হচ্ছে না? কার্যকারিতা যেখানে এক, সেখানে কেন দামি ওষুধেই জোর দেওয়া হচ্ছে— তা নিয়ে সরব হন বিরোধী দলের এক সাংসদ। দলমত নির্বিশেষে সাংসদেরা মনে করছেন, দামি ওষুধ ব্যবহারের অধিকাংশ ক্ষেত্রে ওষুধ সংস্থাগুলির চাপ রয়েছে। আগামী ২০ জুলাই শ্রম মন্ত্রকের এবং ৪ অগস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির বৈঠক রয়েছে। সেখানেও দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কথা হতে পারে।

Advertisement

আরও পড়ুন: স্যানিটাইজ়ারে চড়া কর, কেন্দ্রের মতে যুক্তি আছে

আরও পড়ুন: হাল বুঝতে লাদাখ যাবেন রাজনাথ

গত ছ’মাসের অভিজ্ঞতায় চিকিৎসকেরা দেখেছেন, করোনার সংক্রমণ-মুক্ত হওয়ার পরেও বেশ কিছু রোগী নানাবিধ সমস্যায় ভুগে চলেছেন। যার মধ্যে একটি বড় সমস্যা হল, রক্তনালীতে রক্ত জমে যাওয়া। অক্সিজেনের অভাবে রক্ত ডেলা পাকিয়ে অনেক সময়ে ব্রেন স্ট্রোক ঘটাচ্ছে। রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পরেও এমন ঘটনা ঘটেছে। কারও কারও ক্ষেত্রে রক্তের ডেলা ফুসফুসে পৌঁছে ক্ষতি করেছে। এতে রোগীর করোনা সেরে যাওয়ার তিন মাস পরেও ফুসফুসে ক্ষত তৈরি হয়েছে। কেউ শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, কারও শুকনো কাশি রয়ে যাচ্ছে। করোনা সেরে গেলেও অনেক রোগী এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ছেন যে, তাঁরা দীর্ঘদিন বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না।

রোগীদের (বিশেষত যাঁরা সেরে উঠেছেন) শরীরে করোনা-সংক্রমণ দীর্ঘ মেয়াদে কী ধরনের ক্ষতি করছে, তা খতিয়ে দেখতে দিল্লির কেন্দ্রীয় হাসপাতালগুলিকে দায়িত্ব দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি রাজেশ ভূষণ জানান, সফদরজঙ্গ হাসপাতাল, লেডি হার্ডিঞ্জ, রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতাল এবং দেশের অন্যান্য প্রান্তে থাকা এমস (দিল্লি বাদে) হাসপাতালের চিকিৎসকদের এই কাজটি করতে বলা হয়েছে। এর ভিত্তিতে সুস্থ হওয়া রোগীদের জন্য খুব দ্রুত একটি আচরণবিধি প্রকাশ করার কথা ভাবা হয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ‘রেকর্ড’ সংখ্যক ২৯,৪২৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত ৫৮২ জন। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) আজ জানিয়েছে, সারা দেশে ১৩০২ জন চিকিৎসক কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন ৯৯ জন— তাঁদের মধ্যে ৭ জনের বয়স পঁয়ত্রিশের কম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement