প্রতীকী ছবি।
কোভিড-১৯ ঠেকাতে দেশের ৩২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫৬০টি জেলায় লকডাউন চালু ছিলই। তবু নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে পথে নেমে হুল্লোড়-জমায়েত করার দায়ে দিল্লিতে এফআইআর হয়েছে প্রায় হাজার জনের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন রাজ্যে চলছে দেদার ধরপাকড়। শুধু কলকাতাতেই ধৃতের সংখ্যা ২৫৫। তবু ঠেকানো যাচ্ছে না সংক্রমণ। আইসিএমআর জানাচ্ছে, দিনের শেষে সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৩৬। যদিও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেবে সংখ্যাটা ৫১৯। সেরে উঠেছেন বা বিদেশে চলে গিয়েছেন ৪০ জন। দেশে এ পর্যন্ত ১০ জন মারা গিয়েছেন কোভিড-১৯-এ। মুম্বইয়ে বছর পঁয়ষট্টির এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে আজ। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে ফিরেছিলেন সম্প্রতি। জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি ছিলেন কস্তুরবা হাসপাতালে। বৃহন্মুম্বই পুরসভা সূত্রের খবর, আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবিটিসে ভুগছিলেন তিনি। শুধু মুম্বইয়ে এই নিয়ে তিন জনের মৃত্যু হল। মুম্বইয়ের ১৪ জন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেও, মহারাষ্ট্রে সংক্রমিতের সংখ্যা এখন ১০১। গোটা রাজ্যেই কার্ফু জারি হয়েছে এ দিন। কেরলে সংক্রমণ মিলেছে আট বিদেশি-সহ ৯৫ জনের শরীরে। কর্নাটকে আক্রান্ত ৩৭ জন, রাজস্থানে ৩৩। উত্তরপ্রদেশেও ৩৩ জনের কোভিড-১৯ ধরা পড়েছে। হরিয়ানায় সংখ্যাটা ২৬, পশ্চিমবঙ্গে ৯।
মণিপুরে আজ প্রথম করোনা সংক্রমিতের খোঁজ মিলেছে। ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজির ছাত্রী তিনি। বছর তেইশের ওই তরুণী সম্প্রতি লন্ডন থেকে দিল্লি ও কলকাতা হয়ে নিজ রাজ্যে ফিরেছিলেন। সূত্রের খবর, গত ২০ মার্চ তিনি কাতার-ফেরত ভাইয়ের সঙ্গে সারা দিন কলকাতাতেই ছিলেন। কলকাতায় তাঁরা কারও সংস্পর্শে এসেছিলেন কি না, সেই খোঁজ শুরু হয়েছে। মণিপুরে প্রথম সংক্রমণের রিপোর্ট পেয়েই গোটা রাজ্যে কার্ফু জারি করেছে প্রশাসন।
কিছুটা স্বস্তির খবর মিলেছে দিল্লি থেকে। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল আজ দাবি করেছেন, গত ৪০ ঘণ্টায় তাঁর রাজ্যে একটিও নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েনি। একই ভাবে আজ নতুন করে করোনা-সংক্রমণের খবর মেলেনি বিহার থেকেও।
করোনা-সংক্রমণ কোনও ভাবেই যাতে তৃতীয় স্তর বা গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়ে না-পৌঁছয়, সে জন্য চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না কোনও রাজ্যই। কেন্দ্র জানিয়েছে, দরকার বুঝলেই কার্ফু জারি করা যেতে পারে।
তবে করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ নিয়ে চিন্তা বেড়েছে নয়ডার গৌতম বুদ্ধ নগরের দু’জনকে ঘিরে। সেখানে বছর সাতচল্লিশের এক মহিলা ও তাঁর ছেলের শরীরে নোভেল করোনাভাইরাস মিলেছে! সূত্রের খবর, মা-ছেলে কেউই সাম্প্রতিক কালে দেশের বাইরে যাননি।
পশ্চিমবঙ্গের মতোই আজ ৩১ মার্চ পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছে গোয়া ও সিকিম। সিকিমে লকডাউন কার্যকরী হচ্ছে কাল থেকে। লকডাউন চলছে তামিলনাড়ুতেও। সে রাজ্যে প্রত্যেক রেশনকার্ডধারী চাল, চিনি ছাড়াও ১০০০ টাকা পাবেন। উত্তরাখণ্ড সরকার রাজ্যবাসীকে তিন মাসের অগ্রিম রেশন দেবে। অসমে করোনা-মোকাবিলায় বিধায়কেরা দেবেন এক মাসের বেতন। দরকারে আগামী কয়েক মাস বেতন নেবেনই না বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী-বিধায়কেরা। গুয়াহাটির সব পথবাসীকে সরকারি নৈশগৃহে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।