— ছবি সংগৃহীত
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশে অক্সিজেনের সঙ্কট তো চলছেই, তার মধ্যে চিকিৎসক-নার্স অপ্রতুল। সেই সমস্যা নিরসনে মেডিক্যাল পড়ুয়া এবং শিক্ষানবিশ ডাক্তারদের করোনা চিকিৎসায় কাজে লাগানো যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রীর দফতর (পিএমও)-এর তরফে আজ জারি করা একটি বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে। কোভিড-সঙ্কটে দেশে টিকার ঘাটতি নিয়ে ইতিমধ্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে। তাকে আরও উস্কে দিয়ে টিকা প্রস্তুতকারক বহুজাতিক সংস্থা ফাইজ়ার জানিয়েছে, তারা প্রতিষেধক নিয়ে বসেই রয়েছে, কিন্তু ভারত সরকারের অনুমোদন মিলছে না।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার ১৪৭ জন। দেশের মোট সংক্রমণ দু’কোটি ছুঁইছুঁই। সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালগুলিতেও বাড়ছে রোগী ভর্তির সংখ্যা। এই যুদ্ধ-পরিস্থিতি সামাল দিতে আজ পিএমও এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘শিক্ষানবিশ চিকিৎসক এবং মেডিক্যাল কলেজের ফাইনাল বর্ষের পড়ুয়াদের প্রয়োজন পড়লে করোনা চিকিৎসার কাজে লাগানো হবে। টেলিফোনে করোনা রোগীদের পরামর্শ দেওয়া অথবা মৃদু উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীদের চিকিৎসার মতো কম ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব তাঁদের দেওয়া যেতে পারে। তবে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক এবং মেডিক্যাল কলেজের ফাইনাল বর্ষের পড়ুয়ারা কাজ করবেন সিনিয়র ডাক্তারদের অধীনে।’’
একই ভাবে বিএসসি নার্সিং এবং জেনারেল নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফ (জিএনএম) ডিগ্রিপ্রাপকদেরও করোনা চিকিৎসায় কাজে লাগানো যাবে বলে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে। তাঁরাও সিনিয়র ডাক্তার ও নার্সদের অধীনেই কাজ করবেন। কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, যে সকল চিকিৎসক ও নার্স করোনা চিকিৎসায় ১০০ দিন কাজ করেছেন, তাঁদের প্রধানমন্ত্রীর তরফে বিশেষ সম্মান দেওয়া হবে। তাঁরা সরকারি পদের জন্য আবেদন করলে তা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিবেচনা করা হবে। স্নাতকোত্তর স্তরে ডাক্তারিতে ভর্তির পরীক্ষা দ্বিতীয় বার পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। ৩১ অগস্টের আগে এই পরীক্ষা হবে না। তবে জানানো হয়েছে, পরীক্ষার আগে মাসখানেক সময় দেওয়া হবে।
সংক্রমণ যত বাড়ছে আমজনতার মধ্যে ততই প্রশ্ন উঠে, প্রতিষেধক মিলবে কবে? প্রতিষেধকের অভাবে অনেক রাজ্যে এখনও তৃতীয় পর্যায়ের টিকাকরণ শুরু করা যায়নি। ফাইজ়ারের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতকে টিকা দিতে তারা তৈরি। আজ নেট মাধ্যমে ফাইজ়ারের সিইও অ্যালবার্ট বুরলা জানান, এক মাস আগেই টিকার ব্যাপারে ভারতের কাছে আবেদন পাঠিয়েছিলেন তাঁরা, করোনা পরিস্থিতিতে সাহায্যের জন্য ফাইজ়ার যে ভারতকে ৭ কোটি ডলার মূল্যের টিকা পাঠাতে চায়, তা জানানো হয়েছিল। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকারের তরফে ইতিবাচক উত্তর মেলেনি। তবে এ ব্যাপারে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সঙ্গে তাঁদের কথা চলছে বলে জানিয়েছেন অ্যালবার্ট।
এ দিকে সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে হরিয়ানায় এক সপ্তাহ ও ওড়িশায় দু’সপ্তাহ লকডাউন ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার।