মুম্বইয়ে লালারস সংগ্রহ করছেন এক স্বাস্থ্যকর্মী। ছবি: রয়টার্স।
রোজকার সংক্রমণের হিসেবে আবারও ২০ হাজারের গণ্ডি টপকাল ভারত। পর-পর দু’দিন। আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২২,৭৭১টি নতুন সংক্রমণ ধরে দেশ জুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন সাড়ে ছ’লক্ষ ছুঁইছুঁই। মৃত ১৮,৬৫৫। তবে সুস্থতার হারও লাগাতার তিন দিন ৬০ শতাংশের উপরে বলে জানিয়েছে মন্ত্রক।
লকডাউন থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে আনলক— ভারত যে ভাবে করোনার সঙ্গে লড়ছে, গোড়া থেকেই তার প্রশংসা করে এসেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। কিন্তু সংক্রমণ যে ভাবে বাড়ছে, তাতে কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করেই হু-র প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন আজ একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘ভারতের এখন ডেটা ম্যানেজমেন্টের উপরেই সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া উচিত। যে যার নিজের মতো করে রিপোর্ট করছে। তা না-করে, দেশ জুড়ে একটাই নির্দেশিকা চালু হওয়া উচিত।’’
স্বামীনাথনের মতে, করোনা-যুদ্ধে ভারতের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দেশের জনসংখ্যা, ভৌগোলিক বৈচিত্র এবং রাজ্যে-রাজ্যে নানাবিধ মহামারির প্রকোপ। ভারত তবু এরই মধ্যে যে ভাবে টেস্ট-কিটের উন্নতির পাশাপাশি রোজ গড়ে ২ লক্ষেরও বেশি পরীক্ষা করাচ্ছে, তার ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। কিন্তু করোনার তথ্য বিশ্লেষণে পদ্ধতিগত দৃষ্টিভঙ্গি আরও যথাযথ হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দেশে আক্রান্ত -৬,৪৮,৩১৫
মৃত- ১৮,৬৫৫
সুস্থ-৩,৯৪,২২৬
(শনিবারের করোনা বুলেটিন।
সূত্র: কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক)
সম্প্রতি করোনা-পরীক্ষা বাড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা হু-হু করে বাড়লেও, আখেরে তাতে সংক্রমণের গতিপ্রকৃতি বোঝার ক্ষেত্রে লাভই হয়েছে বলে দাবি দিল্লি সরকারের। রাজধানীর প্রায় সব কন্টেনমেন্ট এলাকায় ১৮ জুন থেকে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরু হয়েছে। দিল্লিতে এখনও পর্যন্ত যে ৬ লক্ষ পরীক্ষা হয়েছে, তার ৪৫ শতাংশ গত ১৬ দিনে হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। আজই সংক্রমণ-তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ছাড়িয়েছে। রাজ্য সরকারের দাবি, পরীক্ষা বেড়েছে বলেই সংখ্যায় এই বাড়বৃদ্ধি।
আরও পড়ুন: সেরে ওঠার ২৮ দিনের আগে প্লাজ়মা দেওয়া নয়
দেশে সুস্থতার হার যে ভাবে বাড়ছে, তার জন্য উপসর্গ-ভিত্তিক চিকিৎসাকেও কৃতিত্ব দিচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। ইনভেস্টিগেশনাল থেরাপি হিসেবে গত ১৩ জুন থেকে মাঝারি উপসর্গে রেমডেসিভিয়ার ওষুধ ব্যবহারে ছাড়পত্র দিয়েছিল মন্ত্রক। এত দিন তা ছিল ছ’দিনের ডোজ়। নতুন নির্দেশিকায় পাঁচ দিনেই ডোজ় শেষ করার কথা জানিয়েছে মন্ত্রক। তবে এই ওষুধ যে কোনও ভাবেই ১২ বছরের কমবয়সি শিশু, অন্তঃসত্ত্বা কিংবা সদ্য মায়েদের দেওয়া যাবে না, তা ফের জানিয়েছে কেন্দ্র। হৃষীকেশ এমস আজই ১০০ শয্যার একটি নতুন কোভিড ওয়ার্ড চালু করেছে। ১৫ জুলাই থেকে কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটগুলি খোলার কথা। সে বিষয়ে আজ তাদের সুনির্দিষ্ট আচরণবিধি জানাল কর্মিবর্গ মন্ত্রক। যাতে বেশির ভাগ ক্লাস অনলাইনেই করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসে করাতে হলে মানতেই হবে দূরত্ববিধি।
এ দিকে করোনা-ঝড় আছড়ে পড়েছে বিহারের বিধান পরিষদে। পরিষদের চেয়ারম্যান অবধেশনারায়ণ সিংহের করোনা-রিপোর্ট আজই পজ়িটিভ এসেছে। ১ জুলাই পরিষদের নয়া সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠানে অবধেশের পাশে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। আজ তাঁর লালারসের নমুনা গিয়েছে ল্যাবে। সঙ্গে উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদীরও।