গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
প্রায় ৩ মাস পর দেশে দৈনিক করোনা সংক্রমণ ৬০ হাজারের নীচে নামল। টিকাকরণে জোর দেওয়ার ফলেই সংক্রমণ ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তবে করোনার বিরুদ্ধে সার্বিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে যে হরে টিকাকরণ হওয়া প্রয়োজন, তা থেকে ভারত এখনও ঢের দূরে বলে মনে করছেন তাঁরা। তবে সংক্রমণ কমলেও মৃত্যু থাকল দেড় হাজারের উপরেই।
রবিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, সেই অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৫৮ হাজার ৪১৯ জন। শেষ বার গত ৩১ মার্চ দেশে দৈনিক সংক্রমণ ৬০ হাজারের নীচে ছিল (৫৩,৪৮০)। তার পর ৮০ দিন পর দৈনিক সংক্রমণ এতটা নামল। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ২ কোটি ৯৮ লক্ষ ৮১ হাজার ৯৬৫। বর্তমানে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৭ লক্ষ ২৯ হাজার ২৪৩।
দৈনিক সংক্রমণ কমার পাশাপাশি সুস্থতায় বৃদ্ধিও আশা জোগাচ্ছে চিকিৎসক মহলকে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৭ হাজার ৬১৯ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। মোট আক্রান্তের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ২ কোটি ৮৭ লক্ষ ৬৬ হাজার ৯ জন রোগী করোনার প্রকোপ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ ছাড়াও, লাগাতার দৈনিক সংক্রমণের চেয়ে দৈনিক সুস্থতা বেশি হওয়াও ভাল লক্ষণ বলে মনে করা হচ্ছে।
দীর্ঘ টানাপড়েন কাটিয়ে সুসংহত ভাবে টিকাকরণ শুরু হতেই দেশের করোনা পরিসংখ্যানে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। কেন্দ্রের হিসেব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮ লক্ষ ১০ হাজার ৫৫৪ জনকে কোভিড প্রতিরোধী টিকা দেওয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত টিকাকরণের আওতায় আনা গিয়েছে দেশের ২৭ কোটি ৬৬ লক্ষ ৯৩ হাজার ৫৭২ জন নাগরিককে।
তবে টিকাকরণ এগোতে থাকলেও, মৃত্যু এখনও আটকানো যাচ্ছে না সে ভাবে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার প্রকোপে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৫৭৬ জন রোগী। এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩ লক্ষ ৮৬ হাজার ৭১৩ জন রোগীর। তবে সংক্রমণের হার লাগাতার কমছে। প্রতিদিন যত সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা হয় এবং তার মধ্যে যতগুলি রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই দৈনিক সংক্রমণের হার বলা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণের হার ছিল ৩.২২ শতাংশ।
দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্রেই করোনার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। সেখানে এখনও পর্যন্ত ৫৯ লক্ষ ৬৩ হাজার ৪২০ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ১ লক্ষ ১৭ হাজার ৩৫৬ জন করোনা রোগীর। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় কেরলেই সবচেয়ে বেশি মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন, ১২ হাজার ৪৪৩ জন। মারা গিয়েছেন ১১৫ জন রোগী। মহারাষ্ট্রে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৮ হাজার ৯১২ জন। তবে মারা গিয়েছেন ৬৮২ জন। তামিলনাড়ুতে নতুন করে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে ৮ হাজার ১৮৩ জনের মধ্যে। মারা গিয়েছেন ১৮০ জন। মোট সংক্রমণ এবং মৃত্যুর নিরিখে দেশের মধ্যে প্রথম দশে রয়েছে যথাক্রমে মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, কেরল, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, ছত্তীসগঢ় এবং রাজস্থান।