ছবি: পিটিআই।
সংক্রমণকে রুখতে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোনে আরও বেশি পরীক্ষা ও নজরদারি বাড়ানোর রাখার উপরে জোর দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
করোনা মোকাবিলায় আজ ৭ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সংক্রমিত এলাকাগুলি থেকে নতুন করে সংক্রমণ অন্যত্র ছড়িয়ে পড়া রোখা নিশ্চিত করার উপরে জোর দিলেন মোদী। প্রয়োজনে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোনে লকডাউন করার সুপারিশ করলেন তিনি। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, আজ প্রথম লকডউনের ছয় মাস কেটে গেলেও এখনও সংক্রমণ রুখতে বৈঠক করতে হচ্ছে মোদীকে। অথচ ওই মোদীই প্রথম লকডাউনের সময়ে দাবি করেছিলেন, তিন সপ্তাহে জয় পাবে তাঁর সরকার। কোভিড-১৯ নিয়ে বিরোধীদের নানা অভিযোগ থাকলেও, গোটা বাদল অধিবেশনে করোনা নিয়ে একটি শব্দ খরচ করেননি প্রধানমন্ত্রী। কিংবা লকডাউনের ফলে যে অর্থনীতির বেহাল দশা হয়েছে, তা নিয়েও নীরব থাকলেন তিনি। তবে আজকের বৈঠকে রাজ্যগুলির দাবি মেনে ‘রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিল’ থেকে করোনা মোকাবিলায় ৫০ শতাংশ অর্থ খরচ করার ছাড়পত্র দিয়েছেন মোদী। আগে রাজ্যগুলি সর্বাধিক ওই তবহিলের ৩৫ শতাংশ কোভিড খাতে ব্যবহার করতে পারত।
দেশের ৭০০ জেলার মধ্যে এই মুহূর্তে সাতটি রাজ্যের ৬০টি জেলার করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ করোনা সংক্রমণের আঁতুড়ঘর হল ওই সাতটি রাজ্য। সরকারের মতে, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ, তামিননাড়ু, দিল্লি ও পঞ্জাব-এই সাতটি রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি উন্নতি হলেই দেশে সংক্রমণ অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। সে কারণে ওই সাত রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে আজ বৈঠকে বসেন মোদী। মুখ্যমন্ত্রীদের বক্তব্য শোনার পরে কেন্দ্র ও রাজ্য সমন্বয় বাড়াতে গোড়াতেই রাজ্যের দাবি মেনে করোনা খাতে রাজ্যগুলি যাতে দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিল থেকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যবহার করতে পারে তাতে ছাড়পত্র দেওয়ার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিল তহবিলের অর্থের ৭৫ শতাংশ দেয় কেন্দ্র। বাকি ২৫ শতাংশ দিয়ে থাকে রাজ্য। এত দিন ওই তহবিলের ৩৫ শতাংশ অর্থ করোনা মোকাবিলায় খরচ করার অনুমতি ছিল রাজ্যের। আজ মোদী নিজের বক্তব্যের গোড়াতে জানান, ‘‘এখন থেকে রাজ্যগুলি ওই তহবিলের অর্থের ৫০% করোনা মোকাবিলায় ব্যবহার করতে পারবে।’’
আরও পড়ুন: কৃষি বিল ফেরাতে রাষ্ট্রপতিকে ১৭টি বিরোধী দলের চিঠি, ধর্না-ঐক্যে ফাঁক
আরও পড়ুন: ‘ফায়দা তুলতে পারে পাকিস্তান’
ঘটনাচক্রে আজই ছয় মাস পূর্ণ হয়েছে প্রথম লকডাউন ঘোষণার। গত ২৪ মার্চ মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী। আজ ছয় মাসের মাথায় মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘‘প্রথম লকডাউন সাফল্য পাওয়া গিয়েছিল।’’ ছয় মাসের মাথায় দেখা যাচ্ছে লক্ষাধিক দেশবাসী করোনায় সংক্রমিত হচ্ছেন। আজ ফের মাস্ক পরে থাকার উপরে জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘কোনও কোনও রাজ্য সপ্তাহে দু-এক দিন লকডাউন করছেন। এতে কতটা কাজ হয়, সেটা বিচার
করে দেখতে হবে। এমন নয়তো, রাজ্যের অর্থনীতির চাকা এর ফলে আটকে যাচ্ছে?’’ সব রাজ্যের মধ্যে তালমিল আরও বাড়ানোর উপরে জোর দিয়ে মোদী বলেন, “খেয়াল রাখতে হবে, অক্সিজেন সিলিন্ডার কিংবা জীবনদায়ী ওষুধের আন্তঃরাজ্য সরবরাহে সমস্যা না হয়।”