রয়টার্সের প্রতীকী ছবি।
কঠিন সময়ে ধর্মের বেড়াজাল অতিক্রম করে মানবতার বন্ধন আরও পোক্ত করলেন এক দল মুসলিম যুবক। রমজানের নিয়ম পালন করেও পিপিই কিট পরে হিন্দু ভাইদের সৎকারে উদ্যোগী হয়েছেন তাঁরা। হাহাকারের মধ্যেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের এই ছবিই যেন বেঁচে থাকার অক্সিজেন। তারই অন্যতম উত্তরপ্রদেশের লখনউ।
৩৩ বছরের ইমদাদ ইমান গ্রাফিক ডিজ়াইনারের পাশাপাশি একটি বিপণির মালিক। থাকেন মকবরা গোলগঞ্জে। দলের ২২ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে ইমদাদ এখনও পর্যন্ত সাত জন হিন্দুর সৎকার করেছেন তাঁরা। সাহায্য করেছেন ৩০ জন মুসলিমের শেষকৃত্যেও। মৃতদের অধিকাংশেরই পরিজন এই শহরে থাকেন না। তাই শেষ কাজে ইমদাদের দলই হয়ে উঠেছে ত্রাতা। তাঁর কথায়, ‘‘এঁদের অধিকাংশেরই পরিজন শহরে থাকেন না। কয়েক জনের আত্মীয় থাকলেও প্রবল অসুস্থ তাঁরা। এক জনের মৃত্যুর খবর তো প্রতিবেশীর কাছ থেকে পেয়েছিলাম।’’ কোভিড পরিস্থিতিতে গত বছর থেকেই মানুষের শেষ কাজে পাশে দাঁড়িয়েছেন এই যুবক। তৈরি করেছেন ‘কোভিড ১৯ তদফিন কমিটি’।
প্রয়াগরাজেও একই ছবি। এলাহাবাদ হাই কোর্টের যুগ্ম রেজিস্ট্রার হেম সিংহ সপ্তাহখানেক আগে বন্ধু সিরাজকে জানিয়েছিলেন, তিনি করোনায় আক্রান্ত। এর পরে হাসপাতালে ভর্তি হলেও করোনার সঙ্গে যুঝতে পারেননি। মৃত্যুর পরে সংক্রমণের ভয়ে শেষকৃত্যে অংশ নিতে রাজি হননি পরিজন। শেষ পর্যন্ত ৪০০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে হেমের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন সিরাজ।
ইতিমধ্যেই ইসলামিক মাদ্রাসা মডার্নাইজেশন টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে প্রস্তাব দিয়েছে, সমস্ত মাদ্রাসাকে কোভিড পরিষেবার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। দেশের স্বার্থে মাদ্রাসা শিক্ষকেরা করোনা যোদ্ধা হিসেবে কাজ করতে আগ্রহী বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি।
মধ্যপ্রদেশের রাইসেন জেলার মান্ডিদ্বীপ এলাকায় মুসলিমরা ৫ একর ইদগাঁ ময়দান ছেড়ে দিয়েছেন করোনা সেন্টার তৈরির জন্য। সম্প্রতি ওই রাজ্যেরই বিদিশাতেও হিন্দুর সৎকারে মুসলিম যুবকদের এগিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে।
গুজরাতের বডোদরাতেও মুসলিমদের উদ্যোগে একটি মসজিদকে কোভিড হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে।