মুম্বইয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে থার্মাল স্ক্রিনিং করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ছবি: পিটিআই।
করোনা সংক্রমণে প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে ভারত। কোভিড আক্রান্তের সংখ্যায় রাশিয়াকে টপকে ইতিমধ্যেই বিশ্বে ভারত তৃতীয় স্থানে পৌঁছে গিয়েছে। এ বার দেশের বড় শহরও অন্য দেশগুলিকে রীতিমতো টেক্কা দিচ্ছে। সংক্রমণের নিরিখে আজ চিনকে পিছনে ফেলে দিয়েছে মুম্বই। তবে এই পরিস্থিতিতে আশার কথা শুনিয়েছেন সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই)-র বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের আশা, চলতি বছরের শেষেই তাঁরা কোভিড-১৯ প্রতিষেধক তৈরি করে ফেলবেন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক আজ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬৭ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। তার ফলে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ২০,১৬০। গত ২৪ ঘণ্টায় ২২ হাজার ২৫২ জন নতুন করে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন।
করোনা সংক্রমণের নিরিখে দেশে শীর্ষে মহারাষ্ট্র। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেব, সে রাজ্যে ২ লক্ষ ১১ হাজারের বেশি মানুষ করোনা-আক্রান্ত। প্রাণ হারিয়েছেন ৯ হাজারের বেশি। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, মহারাষ্ট্রে শুধু মুম্বইয়েই কোভিড-১৯ রোগাক্রান্তের সংখ্যা ৮৫,৭২৪ এবং মৃত্যু হয়েছে ৪৯৩৮ জনের। আক্রান্ত ও মৃতের নিরিখে চিনকে ছাপিয়ে গিয়েছে দেশের বাণিজ্য রাজধানী। একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষা বলছে, চিনে আক্রান্তের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ৮৩,৫৬৫ এবং ৪৬৩৪ জন মারা গিয়েছেন। মুম্বইয়ের ধারাভি বস্তিতে রোজ যত সংক্রমণ হচ্ছে, চিনে প্রতিদিন সেই সংখ্যা তার অনেক কম। যদিও আজ ধারাভিতে মাত্র এক জন সংক্রমিত হয়েছেন। তথ্য বলছে, করোনাভাইরাসের উৎপত্তি যে দেশে, সেখানে দিনে নতুন কোভিড রোগীর সংখ্যা দুই অঙ্কের ঘর পৌঁছচ্ছে না। গত ১ জুলাই থেকে মুম্বইয়ে গড়ে ১১০০-র বেশি মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন।
দেশে আক্রান্ত ৭,১৯,৬৬৫ মৃত ২০,১৬০ সুস্থ ৪,৩৯,৯৪৭ (মঙ্গলবারের করোনা বুলেটিন। সূত্র: কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক)
আরও পড়ুন: সংক্রমণের মাত্রা বাড়লেও কি গোষ্ঠী প্রতিরোধ তৈরি হয়, তত্ত্ব নিয়ে প্রশ্ন
করোনা অতিমারি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে ১৫ লক্ষের বেশি মানুষকে কোয়রান্টিন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বৃহন্মুম্বই পুরসভা (বিএমসি)। এঁদের মধ্যে ৫ লক্ষের বেশি মানুষের থেকে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা অত্যন্ত বেশি ছিল। যদিও বিএমসির দাবি, মুম্বইয়ে এখন সুস্থতার হার ৬৭ শতাংশ। রোগাক্রান্তের সংখ্যার হিসেবে গত কালই তুরস্ককে (২,০৫,৭৫৮) পিছনে ফেলেছে মহারাষ্ট্র। গত ৪ জুলাই সংক্রমণের নিরিখে উদ্ধব ঠাকরের রাজ্য পিছনে ফেলে দিয়েছে জার্মানি এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকেও।
এই পরিস্থিতিতে করোনা প্রতিষেধক কবে মিলবে সে দিকেই তাকিয়ে গোটা বিশ্ব। চলতি বছরের শেষেই করোনার প্রতিষেধক তৈরি হবে বলে আশা করেছেন সিআইআইয়ের সিইও আদর পুনাওয়ালা। আজ তিনি বলেন, ‘‘প্রতিষেধক নিয়ে আমরা কোনও তাড়াহুড়ো করতে চাই না। নিরাপদ এবং কার্যকর প্রতিষেধক তৈরির উপরেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।’’
গত কাল ভোপালের একটি হাসপাতালের বাইরে করোনা আক্রান্তকে ফেলে যাওয়া নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা শুরু হয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ওই ব্যক্তিকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে এনে হাসপাতালের সামনে ফুটপাতে নামিয়ে রেখে চলে যান অ্যাম্বুল্যান্স চালক। এই ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের ভাইঝির করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনেই রয়েছেন। তা নিয়ে রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি নীতীশের করোনা পরীক্ষা হয়েছিল। সেই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।