ছবি: পিটিআই।
শুধু আমেরিকা নয়, বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সরবরাহের বরাত নিচ্ছে ভারত। বিরোধীরা এ নিয়ে প্রশ্ন তুললেও কূটনীতির লোকজনের মতে, এর পিছনে মোদী সরকারের অন্তত চারটি উদ্দেশ্য কাজ করছে:
এক, ওষুধটির বাড়তি চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে করোনা-মোকাবিলায় বিশ্বে ভারতের একটি ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করা।
দুই, মন্দার মেঘেও কিছুটা আর্থিক লাভ কুড়িয়ে নেওয়া।
তিন, করোনা চিকিৎসার সাজ-সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকা। আমেরিকা, স্পেন ও ব্রিটেনে ওষুধ রফতানির পর, লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা এবং পূর্ব ও পশ্চিম এশিয়ার বেশ কিছু দেশে দ্রুত হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য এবং বাণিজ্য মন্ত্রক। সরকারি সূত্রের দাবি, এতে জাপান, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কোরিয়া ও ব্রিটেনের মতো দেশগুলি থেকে এন-৯৫ মাস্ক-সহ করোনা-মোকাবিলার সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে ভারত বাড়তি সুবিধা পেতে পারে।
আরও পড়ুন: করোনার পর কেমন বৃদ্ধির হার ভারত-সহ বিশ্বের? IMF-এর পূর্বাভাস
চার, পশ্চিম এশিয়ার উপকূলবর্তী আরব দেশগুলিতে প্রায় ৮০ লক্ষ ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত কর্মরত। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী সম্প্রতি টুইট করে তাঁদের ফেরানোর অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রীকে। সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে চাইছে উল্টো পথে। ওই ভারতীয়েরা যাতে সেখানেই থেকে যেতে পারেন, দুর্দশায় না-পড়েন, কাজ খোয়াতে না-হয়— সেই লক্ষ্যেই নরেন্দ্র মোদী ব্যক্তিগত ভাবে দৌত্য চালিয়ে যাচ্ছেন। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা নিরন্তর যোগাযোগ রেখে চলছেন পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে। আরব দেশগুলির চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ রফতানি ও চিকিৎসা-সাহায্য জোগানোরও অন্যতম লক্ষ্য এটি। সাউথ ব্লকের কর্তারাও ঘরোয়া ভাবে এই যুক্তিই তুলে ধরছেন।
আরও পড়ুন: লকডাউনের তোয়াক্কা না-করে ধুমধাম করে দেবগৌড়ার নাতির বিয়ে!
কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা ওষুধ রফতানি নিয়ে প্রশ্ন তোলায় সরকারি সূত্রে আগেই জানানো হয়েছিল, প্রয়োজনের চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি ট্যাবলেট মজুত রেখেই রফতানি করা হবে। এখন বিরোধীদের বক্তব্য, সার্বিয়ায় মাস্ক রফতানি, আমেরিকার চাপে ‘নতি স্বীকার’ করে ওষুধের ঢালাও রফতানি নিয়ে বিতর্ক আড়াল করতেই ‘কূটনৈতিক লাভের’ কথা বলা হচ্ছে। চিকিৎসা-সরঞ্জামের ঘাটতির প্রশ্নটিতেও সরকার জল ঢালতে চাইছে আমদানির প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে। যদিও বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, বিষয়টি আদৌ এই রকম নয়। চিনকে বাদ দিলে টেস্টিং কিট, পিপিই স্যুট এবং মাস্ক উৎপাদনে এগিয়ে রয়েছে কোরিয়া, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া। তাদের সঙ্গে সব রকম কূটনৈতিক দৌত্য চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে, ওই সব চিকিৎসা-পণ্য আমদানির জন্য।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।