মিনাল দাখাভে ভোঁসলে
সুখবরটা যখন শুনলেন, তখন হাসপাতালে শুয়ে মিনাল। কোলে সদ্যোজাত কন্যা। মা হওয়ার আনন্দ কয়েক গুণ বেড়ে গেল যখন জানতে পারলেন, তাঁর নেতৃত্বে তৈরি করোনা পরীক্ষার কিট ন্যাশনাল ইন্সটিউট অব ভাইরোলজির (এনআইভি) গুণমানের মাপকাঠিতে সসম্মানে উত্তীর্ণ করেছে।
গত কয়েক দিনে বারবার অভিযোগ উঠেছে, ভারতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পরীক্ষা করা হচ্ছে না বলে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সঠিক সংখ্যা জানা যাচ্ছে না। টেস্ট কিটের অভাবে মেটাতে এ বার পুণের একটি সংস্থাকে কিট তৈরি ও বিক্রির পূর্ণ ছাড়পত্র দিল এনআইভি। এই সাফল্য এল যাঁর হাত ধরে, তিনি ওই সংস্থার তরুণী গবেষক মিনাল দাখাভে ভোঁসলে। যাঁর আসল লড়াইটা ছিল সময়ের সঙ্গে। এক দিকে গবেষকের দায়িত্ব, অন্য দিকে অসুস্থ শরীর। বেশ কিছু জটিলতা দেখা দেওয়ায় ফেব্রুয়ারির শেষেই হাসপাতালে ভর্তি হন অন্তঃসত্ত্বা মিনাল। কয়েক দিন পরে ছাড়া পেয়েই লেগে পড়লেন গবেষণার কাজে। ইতিমধ্যেই ভারতে করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলতে শুরু করেছে। শারীরিক অসুবিধা সত্ত্বেও দেশের কাজে দায়িত্ব থেকে ছুটি নেননি মিনাল। ১৮ মার্চ তাঁরা এনআইভি-তে নমুনা কিট জমা করেন। সে দিনই সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি হন মিনাল। পরের দিন জন্ম দেন কন্যাসন্তানের।
মিনালের নেতৃত্বে মাত্র ছ’সপ্তাহে তৈরি হয়েছে এই কিট। নাম প্যাথো ডিটেক্ট। মিনালের এই সাফল্যে ভীষণ খুশি তাঁর সংস্থা ও সহকর্মীরাও। প্রস্তুতকারক সংস্থাটি জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহেই প্রথম দফায় তারা পুণে, মুম্বই, দিল্লি, গোয়া, বেঙ্গালুরুতে ১৫০টি কিট পাঠিয়েছে। সোমবার দ্বিতীয় দফায় জন্য কিট পাঠাতে তারা প্রস্তুত। সংস্থার দাবি, এই মুহূর্তে সপ্তাহে ১ লক্ষ কিট তৈরি করা যাবে। প্রয়োজনে তা বাড়িয়ে সপ্তাহে ২ লক্ষ পর্যন্ত করা যায়। এমন প্রত্যেকটি কিট দিয়ে ১০০টি নমুনা পরীক্ষা করা যায়। খরচ পড়বে ১২০০ টাকা। যেখানে করোনা পরীক্ষায় বিদেশ থেকে আনা প্রতিটি কিটের দাম ৪৫০০ টাকা।