নিজামউদ্দিনের জমায়েত। —ফাইল চিত্র
দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। তার অন্যতম কারণ যে দিল্লির নিজামউদ্দিন মারকাজের তবলিঘি জামাত, তা প্রায় স্পষ্ট। কিন্তু ভয়াবহ এই পরিস্থিতির মোকাবিলা কী ভাবে করা সম্ভব, তা নিয়েই ঘুম উড়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর, দেশের অন্তত ১৭টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছেন নিজামউদ্দিনে যোগ দেওয়া মানুষজন। তাঁদের মধ্যে সমাবেশে যোগ দেওয়া দেশ-বিদেশের হাজার দু’য়েক এবং তাঁদের সংস্পর্শে আসা লোকজন মিলিয়ে প্রায় ৯০০০ জনকে শনাক্ত করে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে বলে জানাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
বৃহস্পতিবার রুটিন সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্ম সচিব পুনিয়া সলিল শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘নিজামউদ্দিনে যোগ দেওয়া এবং তাঁদের সংস্পর্শে আসা মিলিয়ে প্রায় ৯০০০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের কোয়রান্টিনে পাঠানোর ব্যবস্থাও করেছে সরকার। এই ৯০০০ জনের মধ্যে ১৩০৬ জনই বিদেশি নাগরিক।’’
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর, নিজামউদ্দিনে তবলিঘি জামাতের যোগসূত্রে কোভিড-১৯ পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে সাড়ে তিনশোরও বেশি মানুষের। এ ছাড়া দিল্লি ও বিভিন্ন রাজ্যের হাসপাতালে ভর্তি কয়েক হাজার মানুষ। এখনও অনেকের রিপোর্ট আসেনি। বেসরকারি সূত্রে জামাতের যোগসূত্রে বিভিন্ন রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৯ জনের।
আরও পড়ুন: দেশে করোনা আক্রান্ত ২ হাজার ছুঁই ছুঁই, মৃত্যু ৫০ জনের
মোকাবিলার কী পন্থা নেওয়া হয়েছে? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর, নিজামউদ্দিন মসজিদকে ইতিমধ্যেই জীবাণুমুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া মসজিদের ৩ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ এলাকায় বসবাসকারী বাসিন্দা, দোকানদার, বাইরে থেকে কাজ করতে আসা সবাইকেই স্ক্রিনিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সর্দি, কাশি, জ্বরের মতো বিন্দুমাত্র উপসর্গ ধরা পড়লেও তাঁদের কোভিড-১৯ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই কাজও শুরু হয়েছে গিয়েছে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর। বাফার এরিয়া ধরা হয়েছে ৫ কিলোমিটার। অর্থাৎ আরও দু’কিলোমিটার ব্যাসার্ধ এলাকার বাসিন্দাদের পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: আসরে ডোভাল, প্রশ্ন শাহের পুলিশকে নিয়ে
রাজ্যগুলিকে আগেই জামাত নিয়ে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গেও সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী জামাতে যোগ দেওয়া সদস্য এবং তাঁদের সংস্পর্শে আসা মানুষজনকে কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। বাকি রাজ্যগুলিতেও একই ভাবে চিহ্নিতকরণ ও সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকেই সব রাজ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিহ্নিতদের স্ক্রিনিং শুরু করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।