ছবি: রয়টার্স।
দেশে কোভিড হটস্পট হয়ে উঠেছে দিল্লি। গত ১০ দিন ধরে সংক্রমণের নিরিখে দিল্লি শীর্ষে। গত কালও রাজধানীতে প্রতি ঘণ্টায় চার জন করোনা-আক্রান্ত প্রাণ হারিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ফের লকডাউনের প্রস্তাব দিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু অরবিন্দ কেজরীবালের সরকার জানিয়ে দিয়েছে, লকডাউনের কথা তারা ভাবছে না। তাদের দাবি, করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ এসে দিল্লিকে ধাক্কা দিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু সংক্রমণের রেখচিত্র এখন নিম্নমুখী।
দিল্লির করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত কাল বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালেরা। বৈঠকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১২ দফা নীতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। সূত্রের মতে, অবস্থা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রের প্রস্তাব ছিল চাইলে নতুন করে লকডাউনের কথা ভাবতে পারে দিল্লি সরকার। কেন্দ্রের তাতে কোনও আপত্তি নেই। এ নিয়ে দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন আজ বলেন, “আবার লকডাউনের প্রশ্নই নেই। কারণ তাতে লাভ নেই। বরং মাস্ক পরা অনেক বেশি কার্যকরী। তা ছাড়া সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ দিল্লিতে ধাক্কা দিলেও, এখন পরিস্থিতি অনেক নিয়ন্ত্রণে।’’ দিল্লি সরকারের যুক্তি, সম্পূর্ণ লকডাউনের পরিবর্তে প্রশাসন কন্টেনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা বাড়িয়েছে। গত দু’সপ্তাহে প্রায় এক হাজার কন্টেনমেন্ট জ়োন বেড়েছে দিল্লিতে। গত ১ নভেম্বর কন্টেনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা ছিল ৩৩৫৯, বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৪৪৩০।
সরকার জানিয়েছে, গত সপ্তাহে যেখানে দিল্লিতে সাত হাজারের কাছাকাছি সংক্রমণ ছিল, এ সপ্তাহে তা কমে সাড়ে তিন হাজারে দাঁড়িয়েছে। অতীতে লকডাউনের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের যে ক্ষতি হয়েছে, তা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে ব্যবসায়ী শ্রেণিকে চটাতে নারাজ কেজরীবাল সরকার। এখন নতুন করে লকডাউন শুরু হলে ফের চাকরি হারানোর পরিস্থিতি তৈরি হবে।
আরও পড়ুন: রোগ ঠেকাতে নজর সাংসদদের মেনুতে
আরও পড়ুন: এক লাফে অনেকটা কমল দৈনিক সংক্রমণ, ২৪ ঘণ্টায় সক্রিয় রোগী কমল ১৩৭৩৮
দিল্লির পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগে রেখেছে কেন্দ্রকে। বিশেষত দিল্লি সরকার দীপাবলির সময়ে বাজি ফাটানো রুখতে কার্যত ব্যর্থ হওয়ায় পরিস্থিতি আগামী সাত দিনে আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। প্রস্তুতির অঙ্গ হিসেবে কেন্দ্র জানিয়েছে, দিল্লিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের হাতে থাকা ডিআরডিও ভবনে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৭৫০টি আইসিইউ শয্যার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বাড়ানো হচ্ছে অক্সিজেনযুক্ত শয্যার সংখ্যাও।