—প্রতীকী চিত্র।
এ বার মাত্র এক মিনিটেরও কম সময়ে মিলবে করোনা পরীক্ষার ফল। যৌথ ভাবে এমন র্যাপিড টেস্ট তৈরিতে ভারতের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে ইজরায়েল। সেই নিয়ে ভারতের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে এ বার দিল্লি এসে পৌঁছল সে দেশের একটি প্রতিনিধি দল। ওই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন সে দেশের একাধিক বিজ্ঞানী ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারতের করোনা রেসপন্স টিমের সঙ্গে কাজ করবেন তাঁরা।
ইজরায়েলি রাষ্ট্রদূত রন মালকা-র নেতৃত্বে সোমবার বিশেষ বিমানে দিল্লি এসে পৌঁছয় ওই প্রতিনিধি দল। সে দেশের বিদেশমন্ত্রক ও একাধিক বেসরকারি সংস্থার পাঠানো উন্নত সরঞ্জাম নিয়ে এসেছে তারা, যার মধ্যে রয়েছে কয়েক ডজন উন্নত ধরনের ভেন্টিলেটরও। বাইরের দেশে ওই ভেন্টিলেটর রফতানি নিষিদ্ধ হলেও, ভারতের জন্য সেই নিয়ম ভেঙেছে ইজরায়েল। মোট চার ধরনের র্যাপিড টেস্ট কিট পাঠিয়েছে তারা, যার মাধ্যমে ৩০-৪০ সেকেন্ডের মধ্যে কোনও ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত কি না বোঝা যাবে।
সামনে থেকে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন যে স্বাস্থ্যকর্মীরা, তাঁরা যাতে সংক্রমিত না হন, তার জন্যও বিশেষ সরঞ্জাম নিয়ে হাজির হয়েছেন ইজরায়েলি গবেষকরা। এ ছাড়াও বিশেষ ভাবে তৈরি স্যানিটাইজার নিয়ে এসেছেন তাঁরা। এ দেশে প্রথমে সেগুলি পরীক্ষা করে দেখা হবে। পরীক্ষা সফল হলে কম খরচে সেগুলি উৎপাদন করে পাঠানো হবে অন্যান্য দেশেও।
আরও পড়ুন: বছরের শেষেই হাতে আসবে করোনার টিকা? আশা জাগাচ্ছে দুই মার্কিন সংস্থা
এর মধ্যে র্যাপি়ড টেস্ট কিটগুলিকেই আপাতত বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ইজরায়েলি রাষ্ট্রদূত রন মালকা বলেন, ‘‘এর মধ্যে যদি একটিও পরীক্ষায় উতরে যায়, তাহলে ৩০-৪০ সেকেন্ডের মধ্যে করোনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। তাতে গোটা দুনিয়ার ছবিটাই পাল্টে যাবে। অন্তত যত দিন পর্যন্ত টিকা না আবিষ্কার করা যাচ্ছে।’’ কণ্ঠস্বর শ্বাসপ্রশ্বাস, দেহের তাপমাত্রা এবং লালারসের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি।
ইজরায়েলে রোগীদের নিয়ে এই পরীক্ষা ইতিমধ্যেই সফল হয়েছে। ভারতে তা কতটা কাজ দেয়, তা-ই এখন দেখার বলে জানিয়েছেন মালকা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা রোগীদের উপর কোনও পরীক্ষা করছি না। বরং তাঁদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করছি। গোটা প্রক্রিয়াটা অত্যন্ত নিরাপদ এবং কোনও ভাবেই তাতে রোগীর কোনও ক্ষতি হবে না। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যে পদ্ধতি মেনে চলি আমরা, এখানেও তা-ই মেনে চলব।’’
বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রধান উপদেষ্টা কে বিজয়রাঘবন নেতৃত্বাধীন এক দল ভারতীয় বিজ্ঞানী এবং ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)-এর গবেষকদের নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই এই র্যাপিড টেস্ট কিটগুলি নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন ইজরায়েলি গবেষকরা। আগামী ১০ দিনে কয়েক হাজার নমুনা নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলবে বলে জানিয়েছে ইজরায়েলের বিদেশমন্ত্রক।
আরও পড়ুন: অক্সফোর্ড টিকা প্রয়োগের জন্য দেশের পাঁচটি জায়গাকে বেছে নিল কেন্দ্র
ভারতে প্রাথমিক পর্যায়ে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস)-এ কাজ করবেন ইজরায়েল থেকে আসা ওই প্রতিনিধই দল। তার জন্য রোবোটিক সরঞ্জাম নিয়ে এসেছেন তাঁরা, যার মধ্যে রয়েছে রিস্ট মনিটরস। এ মাধ্যমে রোগীর সংস্পর্শে না এসেও তাঁর শারীরিক অবস্থার উপর নজরদারি চালাতে পারবেন চিকিৎসক ও নার্সরা। যে সমস্ত রোগীর অবস্থা গুরুতর, তাঁদের জন্য মোট ৮৩টি উন্নত ধরনের ভেন্টিলেটরও আনা হয়েছে।