আথিনা দাস। ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি।
ভারতীয় দূতাবাসের উদ্যোগে দেশে ফেরার ব্যবস্থা হল লিথুয়ানিয়ায় আটকে পড়া ১৮ জন ভারতীয় ছাত্রছাত্রীর। তাঁদের মধ্যে একজন ছাত্রী কলকাতার বাসিন্দা। রয়েছেন আন্দামানের বাসিন্দা আরও এক বাঙালি ছাত্রী।
ওঁরা সকলেই লিথুয়ানিয়ার কওনাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী। তাঁদের একজন কলকাতার আথিনা দাস। ফোনে তিনি জানিয়েছেন, গত ক’দিনে পূর্ব ইউরোপের ওই দেশটিতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করে। সরকার বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের দেশে ফিরে যেতে অনুরোধ করে। আথিনা বলেন, ‘‘সেই সময়ে গোটা শহরে লকডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। আমরা ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরা এখানে নিজেরা রান্না করে খেতাম। কিন্তু একের পর এক স্টোর বন্ধ হয়ে যায়। চারদিকে খাবারের সঙ্কট শুরু হয়ে যায়।”
এর মধ্যেই কওনাস বিমানবন্দর থেকে একের পর এক বিমান বাতিল হতে থাকে। ভারতীয়দের জন্য ফেরার একটাই রাস্তা। কোনও ভাবে মস্কো পৌঁছতে হবে। কারণ মস্কো থেকেই মিলবে ভারতে ফেরার বিমান।আথিনার বন্ধু বৃষ্টি নন্দী আন্দামানের বাসিন্দা। তিনি বলেন, ‘‘এখানকার সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ আমরা সাহস করে বিমানবন্দরে চলে যাই। বাড়িতেও কথা বলি। সিদ্ধান্ত হয় আমরা বিমানবন্দরে অপেক্ষা করব। তারপর সবার আগে যে বিমানে সুযোগ পাব, তাতেই চড়ে বসব।” কিন্তু তাঁরা বিমানবন্দরে গিয়ে দেখেন একের পর এক বিমান বাতিল। ওই অবস্থায় তাঁরা লিথুয়ানিয়ার ভারতীয় দূতাবাসে ইমেল করেন, নিজেদের অবস্থা জানিয়ে। ভারত সরকারকে অনুরোধ করেন, তাঁদের ফেরানোর ব্যবস্থা করতে।
আরও পড়ুন: নবান্নের আমলার দায়িত্বজ্ঞানহীনতাই করোনা-আতঙ্ক বাড়াল কলকাতায়
বুধবার দুপুরে আথিনা বলেন, ‘‘সারারাত আমরা বিমানবন্দরের বাইরেই বসেছিলাম। সকালে লিথুয়ানিয়ায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত রাজেন্দ্রকুমার চৌধরি আমাদের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি আমাদের আশ্বাস দেন, দেশে ফেরার ব্যবস্থা করা হবে।” বুধবার স্থানীয় সময়ে সকাল ৯টা নাগাদ এরোফ্লোটের বিমানে মস্কো রওনা হন ওই ১৮ জন ভারতীয় ছাত্রছাত্রী। মস্কো বিমানবন্দর থেকে আথিনা বলেন,‘‘দূতাবাসের তরফ থেকে কথা বলে বিমানের ব্যবস্থা করা হয়। যে বিমানে আমরা মস্কো এসেছি সেটাই এরোফ্লোটের শেষ বিমান। ওই বিমানে জায়গা না পেলে আমরা আটকে যেতাম।” আথিনা জানিয়েছেন, মস্কো পৌঁছনোর পর এরোফ্লোট কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানিয়েছেন, মস্কোর স্থানীয় সময় পাঁচটা নাগাদ একটি বিমান দিল্লি যাবে।সেই বিমানে দিল্লি ফেরার কথা তাঁদের। সেই খবর পেয়ে অনেকটাই নিশ্চিন্ত আথিনার বাবাপ্রণব দাস।
আরও পড়ুন: ছেলে ঘুরলেন শপিং মলে, নিজে অফিসে! নবান্নের আমলার ভূমিকায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী