ফাইল চিত্র।
দেশে কোভিড মোকাবিলার রসদে টান। ফলে ‘আত্মনির্ভর’ ভারতের ‘প্রতিষেধক কূটনীতি’ শিকেয় তুলে আপৎকালীন ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংগ্রহে নেমেছে ভারত। মূলত অক্সিজেন, দুষ্প্রাপ্য ওষুধ বোঝাই একের পর এক বিমান গত ২৭ এপ্রিল থেকে এসে নামছে নয়াদিল্লির বিমানবন্দরে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, আরও বেশ কিছু বিমান এই সপ্তাহে পৌঁছবে বিভিন্ন দেশ থেকে।
জানা গিয়েছে, সাহায্যকারী দেশগুলির মধ্যে সবার আগে রয়েছে আমেরিকা। সে দেশের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আজ বলেছেন, ‘‘আমরা ভারতকে বড় মাপের সাহায্য করছি। আমি প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে কথা বলেছি। এখন ওদের যা দরকার তা হল প্রতিষেধক তৈরির জন্য উপাদান। আমরা সেটা পাঠাচ্ছি। পাশাপাশি আমরা অক্সিজেন পাঠাচ্ছি। সব মিলিয়ে ভারতের জন্য অনেক কিছুই করা হচ্ছে।’’ এ কথা বলার মাধ্যমে অদূর ভবিষ্যতে কোন ধরনের কূটনৈতিক সুবিধা আমেরিকা আদায় করবে ভারতের কাছে, সে সব ভাবার মতো অবকাশ এখন মোদী সরকারের নেই।
জি-৭ গোষ্ঠীভুক্ত রাষ্ট্রগুলির বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে লন্ডনে গিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। কিন্তু সেখানেও মূলত অতিমারি মোকাবিলা নিয়েই বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে কথা বলেছেন জয়শঙ্কর। আরও সহায়তার আশ্বাস মিলেছে। রসদ বোঝাই বিমান আজ এসেছে কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং ইজ়রায়েল থেকে। এই রসদের মধ্যে রয়েছে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, ভেন্টিলেটর-সহ আরও কিছু চিকিৎসা সরঞ্জাম।
তবে বিদেশি সাহায্য এবং
তার বিতরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী শিবির। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী টুইট করেছেন, ‘‘কী কী সাহায্য এসেছে? সে সব কোথায়? কারা তার সুফল পাচ্ছে? কী ভাবে সেগুলো রাজ্যের হাতে পৌঁছচ্ছে? স্বচ্ছতা
নেই কেন? ভারত সরকার জবাব
দেবে কি?’’
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, রাশিয়া, আমেরিকা বা ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অক্সিজেন এবং ওষুধের অনেকটাই প্রাথমিক ভাবে দিল্লি ও নয়ডার অনেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, সেখানকার ভয়ঙ্কর সঙ্কটের কথা মাথায় রেখে। পাশাপাশি অন্যান্য রাজ্যেও যাচ্ছে বিদেশি সাহায্য। দেশে সঙ্কট এবং চাহিদার পরিমাণ এখন এতটাই বেশি যে বিদেশ থেকে সাহায্য এলেই সমস্ত অসুস্থ মানুষকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করা যাবে, এমন নয়। কিন্তু কিছুটা ঠেকা দেওয়া যাবে। সেই সময়ে ঘরোয়া উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে বলেই আশা করছে সরকার।
গোটা বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করতে চেয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘‘কোভিড কারও একার সমস্যা নয়। গত বছরে চোখ রাখলে দেখা যাবে, আমরা হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন, প্যারাসিটামল পাঠিয়েছি আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, ইউরোপের দেশগুলিকে। কুয়েতে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে। অনেক দেশকে প্রতিষেধকও দেওয়া হয়েছে। তাই এখন যেটাকে অনুদান বলা হচ্ছে, আমরা সেটাকে বন্ধুর পাঠানো সাহায্য বলছি।’’