Coronavirus

গোষ্ঠী সংক্রমণের আকার নিচ্ছে করোনা? আইসিএমআর-এর রিপোর্ট ঘিরে সংশয়

যদিও রিপোর্টে গোষ্ঠী সংক্রমণ নিয়ে নিশ্চিত কোনও মন্তব্য করেনি আইসিএমআর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২০ ১৮:২৭
Share:

গোষ্ঠী সংক্রমণ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। ছবি: এপি।

শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছেন এমন মানুষদের মধ্যে র‍্যান্ডম (বাছবিচার না করেই) পরীক্ষা চালিয়ে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ দেখেছে এমন অনেক মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন যাদের বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস নেই। সম্প্রতি তাদের পরীক্ষা পদ্ধতি বদল করার পর এই পরিবর্তন নজরে এসেছে।

Advertisement

এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্টও সম্প্রতি ইন্ডিয়ান জার্নাল অব মেডিক্যাল রিসার্চে তারা জমা দিয়েছে। ওই পরীক্ষার ফলাফল দেখে স্বাভাবিক কারণেই সংশয় তৈরি হয়েছে, দেশে করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে কি না। যদিও রিপোর্টে গোষ্ঠী সংক্রমণ নিয়ে নিশ্চিত কোনও মন্তব্য তারা করেনি।

ভারতে করোনা পরিস্থিতি এখনও গোষ্ঠী সংক্রমণের আকার ধারণ করেনি বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। দু’সপ্তাহ আগে আইসিএমআরও একই কথা জানিয়েছিল। কিন্তু এর পর তাদের পরীক্ষা পদ্ধতি বদল করা হয়। এর পরই ফলাফল কিছুটা অন্য ইঙ্গিত দিতে শুরু করে।

Advertisement

আরও পড়ুন: কাল মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পর, পরশুই লকডাউন বাড়ানোর ঘোষণা মোদীর?​

শ্বাসকষ্টের সমস্যায় (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস সংক্ষেপে আসএআরআই) ভুগছেন এমন ৫ হাজার ৯১১ জনের ডাক্তারি পরীক্ষা করেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। তাতে ১০৪ জনের শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাস ধরা পড়েছে, যার মধ্যে ৪০ জনের বিদেশযাত্রার কোনও রেকর্ড নেই। বিদেশফেরত কারও সংস্পর্শেও আসেননি তাঁরা। দেশে নোভেল করোনাভাইরাস গোষ্ঠী সংক্রমণের আকার ধারণ করছে কি না, বেশ কিছু দিন ধরেই তার উপর নজরদারি চালিয়ে আসছে আইসিএমআর। তা নিয়ে ইন্ডিয়ান জার্নাল অব মেডিক্যাল রিসার্চে সম্প্রতি নিজেদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে তারা।

এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘উৎস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মানেই গোষ্ঠী সংক্রমণ। ইদানীংকালে যদি বিদেশ না গিয়ে থাকেন, চেনাশোনার মধ্যে করোনা পজিটিভ কারও সংস্পর্শেও না এসে থাকেন, তা হলে নিশ্চয়ই বাসে, ট্রেনে, এটিএম-এ বা বাজারে অজান্তে ভাইরাস আক্রান্ত কারও সংস্পর্শে এসেছেন। অনেক ক্ষেত্রেই কিন্তু সংক্রমণের উৎস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’’

বক্ষ বিশেষজ্ঞ সুমিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘তিন সপ্তাহ ধরে পরীক্ষা চালিয়ে ৪০ জন এমন আক্রান্তের হদিশ পাওয়া গিয়েছে, যাঁদের কি না বিদেশ যাওয়ার কোনও ইতিহাস নেই এবং করোনা পজিটিভ কারও সংস্পর্শেও আসেননি । এত দিনে সেই সংখ্যাটা নিশ্চয়ই আরও বেড়েছে। করোনা যে গোষ্ঠী সংক্রমণের আকার নিয়েছে তা বোঝাই যাচ্ছে।’’

আরও পড়ুন: এখনও গোষ্ঠী সংক্রমণ নেই ভারতে, ভুল স্বীকার করল হু

আইসিএমআরের রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশের ২০টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫২টি জেলা থেকে ওই ১০৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। যে ১০৪ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাঁদের মধ্যে ৮৫ জন পুরুষ। তাঁদের মধ্যে ৮৩ জনের বয়স আবার চল্লিশের ঊর্ধ্বে। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রে ২১ জনের শরীরে কোভিড-১৯ পাওয়া গিয়েছে। গুজরাত থেকে ১৩ জন, দিল্লি থেকে ১৪ জন, পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৯ জন এবং তেলঙ্গানা থেকে ৮ জনের শরীরে সংক্রমণ মিলেছে।

গোষ্ঠী সংক্রমণের দিকে ভারত এগোচ্ছে কি না, তা দেখতে শুরুতে কেবলমাত্র উপসর্গ থাকা মানুষদের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করেই দেখছিল আইসিএমআর। কিন্তু সংক্রমণ বাড়তে থাকায় মাঝপথে নীতি পরিবর্তন করে তারা। শ্বাসকষ্টের সমস্যা (এসএআরআই) নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন, এমন ৫ হাজার ৯১১ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তাতেই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে।

১৫ মার্চ থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত ১০৬ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করে ২ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়ে। কিন্তু ২২-২৮ মার্চের মধ্যে ২ হাজার ৮৭৭ জনের পরীক্ষা করা হলে ৪৮ জনের শরীরে কোভিড-১৯ ধরা পড়ে। আবার ২৯ মার্চ-২ এপ্রিল পর্যন্ত ২ হাজার ৬৯ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করলে ৫৪ জনের শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাস মেলে। তবে ভারত গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে কি না, তা নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করেনি তারা।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement