ছবি এএফপি।
মাস্কের বহুল ব্যবহার হলে এবং পারস্পরিক দূরত্ব-বিধি ঠিক মতো মেনে চলা হলে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতে কোভিডে দু’লক্ষেরও বেশি মৃত্যু ঠেকানো যাবে বলে জানাল একটি মার্কিন সমীক্ষা।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন’-এর গবেষকেরা মডেলভিত্তিক এই সমীক্ষাটি করেছেন। ওই বিভাগের ডিরেক্টর ক্রিস্টোফার মারের কথায়, ‘‘ভারতে অতিমারি শেষ হতে এখনও অনেক দেরি। এখনও ওই দেশের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ সংক্রমিত হতে পারেন। সুরক্ষা ব্যবস্থার উপরে অনেক কিছু নির্ভর করছে।’’
ভয় মূলত উপসর্গহীন রোগীদের নিয়ে। সম্প্রতি তেলঙ্গানার অন্তত ২০০ কোভিড রোগীকে নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছিল হায়দরাবাদের সেন্টার ফর ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্টিং অ্যান্ড ডায়াগনস্টিকসের বিশেষজ্ঞেরা-সহ গবেষকদের একটি দল। তাঁরা জানিয়েছেন, উপসর্গহীন কোভিড রোগীদের দেহরসেই ভাইরাসের অস্তিত্ব বেশি। ওয়াশিংটনের সমীক্ষা প্রসঙ্গে হরিয়ানার অশোক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গৌতম মেননের বক্তব্য, ‘‘ওই মডেল অনুযায়ী, ডিসেম্বরের শুরু থেকে মাঝামাঝি নাগাদ সংক্রমণের শীর্ষে পৌঁছবে ভারত। বিনা বাধায় সংক্রমণ ছড়ালে ওই সময়ে দৈনিক ৬০ লক্ষ মানুষ সংক্রমিত হবেন। মৃত্যু পৌঁছবে পাঁচ লক্ষের কাছাকাছি।’’ তবে তাঁর মতে, অন্য যে সমস্ত সমীক্ষা ডিসেম্বরের মাঝামাঝির আগেই ভারত সংক্রমণের শীর্ষ ছোঁবে বলে জানিয়েছে, সেগুলির তুলনায় ওয়াশিংটনের এই হিসেব কিছুটা বেশিই দেখাচ্ছে।
আরও পড়ুন: টিকা পেলেই সব সমস্যা মিটবে না, বার্তা সরকারকে
অঙ্কটা যা-ই হোক, মাস্ক ও দূরত্বের সুরক্ষা-বিধি মানা ছাড়া কোনও রাস্তা নেই বলে বারবার জানিয়ে দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা সকলেই। ভারতে ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা গত দু’দিনে ছিল ৭৮ হাজারের বেশি। আজ সেই সংখ্যা অনেকটা কমে হয়েছে ৬৯,৯২১। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেবে, দেশে মোট করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬.৯১ লক্ষ হলেও আন্তর্জাতিক সমীক্ষক সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের হিসেবে তা আজ ৩৭ লক্ষ পেরিয়েছে। তবে ওই সমীক্ষায় সুস্থের সংখ্যাও সাড়ে ২৮ লক্ষের বেশি।
সরকারি হিসেবে দেশে এখন মোট অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যার মোটামুটি সাড়ে তিন গুণ মানুষ সুস্থ হয়েছেন। সুস্থতার হার ৭৬.৯৪ শতাংশে পৌঁছেছে। মৃত্যুহার নেমে এসেছে ১.৭৭ শতাংশে। অ্যাক্টিভ রোগী আছেন মোট আক্রান্তের ২১.২৯ শতাংশ। আইসিএমআর-এর তথ্য বলছে, গত কাল ফের সারা দেশে ১০ লক্ষের বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। মোট পরীক্ষার সংখ্যা ৪.৩৩ কোটি।
আরও পড়ুন: কোভিড-বেড়া মেনেই বিদায় প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে
করোনা পজ়িটিভ হওয়ার পরে গোয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল কেন্দ্রীয় আয়ুষমন্ত্রী শ্রীপদ নাইকের। আজ তাঁর আরটি-পিসিআর পরীক্ষার পরে দেখা যায়, সংক্রমণের মাত্রা অনেকটাই কমেছে। এর ভিত্তিতে আজ তাঁকে কোভিড ওয়ার্ড থেকে জেনারেল ওয়ার্ডে সরানো হয়েছে।