ছবি: এএফপি।
করোনা-সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আসতে শুরু করেছে। কয়েকটি রাজ্যের নতুন নতুন স্থানে প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। সেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে করোনার রেখাচিত্র কমতে শুরু করবে বলে জানালেন ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে গৌবা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নীতি আয়োগের উপদেষ্টা ভি কে পল-সহ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ ও কর্তারা।
বৈঠকে গৌবা বলেন, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, দিল্লির একটি অংশ এবং মহারাষ্ট্রের পুণে, কোলাপুরের মতো জেলা থেকে নতুন করে সংক্রমণের খবর আসছে। এমন জেলা বা শহরে সংক্রমণ হচ্ছে, যেখানে আগে তেমন সংক্রমণ দেখা যায়নি। বিষয়টি চিন্তার। নতুন সংক্রমণের এলাকায় ভাইরাস প্রকৃতি কেমন, তার বিচার বিশ্লেষণ চলছে। তবে এই ধাক্কা সামলে দিতে পারলে সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে সংক্রমণের মাত্রা কমতে পারে।
করোনা মোকাবিলায় নমুনা পরীক্ষার উপরেই জোর দিয়েছেন গৌবা। পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেন তিনি। গৌবা বলেন, আরও পরীক্ষা করে সমস্ত আক্রান্তকে চিহ্নিত করতে হবে, নজরদারিতে আনতে হবে এবং মৃত্যুহার ১ শতাংশের নীচে আনতে হবে। নতুন করে যাঁরা সংক্রমিত হচ্ছেন, তাঁদের অন্তত ৮০ শতাংশের ক্ষেত্রে সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। কন্টেনমেন্ট এলাকায় অ্যান্টিজেন পরীক্ষা বাড়াতে হবে। উপসর্গ থাকলেও যাঁদের নমুনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ, তাঁদের ফের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করানোর উপরে জোর দিতে হবে।
আরও পড়ুন: উর্দুর বেশি কদর মোদী জমানায়, দাবিতে প্রশ্ন
আরও পড়ুন: দেশে এক দিনে করোনায় সংক্রমিত ৭৫ হাজার
১ সেপ্টেম্বর থেকে আনলক-৪ পর্ব শুরু হবে। তখন শহরতলির ট্রেন ও মেট্রো চলাচলে ছাড় দেওয়া হতে পারে বলে জল্পনা। সেটা হলে সংক্রমণের আরও একটা ঢেউ আসবে বলে আশঙ্কা করছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কেউ কেউ। তবে একই সঙ্গে তাঁদের দাবি, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সেই ধাক্কা সামাল দেওয়ার জন্য তৈরি।
বস্তুত, করোনা নিয়ন্ত্রণে পশ্চিমবঙ্গ যে সব ব্যবস্থা নিয়েছে, এ দিনের বৈঠকে তার প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রীয় কর্তারা। কোভিড পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম তাঁদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। আনুষঙ্গিক (কো-মর্বিডিটি) রোগ নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর যে সমীক্ষা শুরু করছে, তা অন্য রাজ্যগুলিরও অনুসরণ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন নীতি আয়োগের উপদেষ্টা। মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘রাজ্যের পদক্ষেপগুলি যে সর্বাত্মক তা কেন্দ্র মেনে নিয়েছে। তবে আত্মতুষ্টির জায়গা নেই। এ রাজ্যে যাতে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আসতে না-পারে, নতুন কোনও স্থানে সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব দেখা না-যায়, সেই জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
মুখ্যসচিব বৈঠকে জানান, রাজ্যের ৮০% করোনা পজ়িটিভ ব্যক্তি বাড়িতেই রয়েছেন। কেন্দ্রীয় কর্তারা জানতে চান, বাড়িতে থাকা এত রোগী সামাল দেওয়া হচ্ছে কী ভাবে? ১ লক্ষ ১৮ হাজার রোগীকে টেলি-মেডিসিনে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ১১.১৪ লক্ষ প্রশ্নের জবাব কল সেন্টারের মাধ্যমে দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।