ছবি এএফপি।
কেউ আনাজ বিক্রি করেন। কেউ মুদিখানা বা দুধের ডিপোতে বসেন, কেউ সাফাই কর্মী, কেউ কাজ করেন পেট্রল পাম্পে। এমন ৩৩৪ জনকে আপাতত চিহ্নিত করেছে গুজরাত প্রশাসন। এঁদের বলা হচ্ছে ‘সুপার স্প্রেডার’। অর্থাৎ এঁদের এক জনের থেকে বহু মানুষ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছেন বলে মনে করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজ্যে, বিশেষত আমদাবাদে করোনার সংক্রমণ এতটাই মারাত্মক যে, ১৫ মে পর্যন্ত শহর শাটডাউন করে দেওয়া হয়েছে। গুজরাতে মোট ৭৭৯৬ জন সংক্রমিতের মধ্যে সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ এবং রাজ্যে মোট মৃত ৪৭২ জনের মধ্যে ৩৬৩ জন আমদাবাদের। স্বাস্থ্যকর্তারা মনে করছেন, ‘সুপার স্প্রেডার’-দের জন্যই সংক্রমণ এতটা ব্যাপক আকার নিয়েছে ওই শহরে। সেই কারণেই শাটডাউন।
এক কর্তা জানান, আমদাবাদে অন্তত ১৪ হাজার ‘সুপার স্প্রেডার’ আছেন বলে তাঁদের সন্দেহ। আগামী ৩ দিনে এঁদের সবাইকে পরীক্ষা করা হবে। পুরসভা এমন ৩৮১৭ জনের নমুনা নিয়েছিল, যাঁদের মধ্যে ৩৩৪ জন পজ়িটিভ। চিন্তা তাই ক্রেতাদের নিয়েও। ভেজলপুর এলাকায় এক দোকান-মালিক পজ়িটিভ হওয়ার পরে তাঁর সমস্ত ক্রেতাকে গৃহ-নিভৃতবাসে পাঠানো হয়েছে। শহরের উপকণ্ঠে ঢোলকা-তে এক তরমুজ বিক্রেতার করোনা ধরা পড়ার পরে তাঁর পরিবার, ক্রেতা, আশেপাশের ফলওয়ালারা মিলিয়ে ৯৬ জনকে কোয়রান্টিন করা হয়। তাঁদের মধ্যে ১২ জন পজ়িটিভ। আগামী দিনেও আমদাবাদের শহরের মতো গ্রামীণ ও শহরতলি এলাকায় সন্দেহভাজনদের পরীক্ষা হবে।
আরও পড়ুন: আজ মোদীর বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীরা ॥ টিকিট আজই, কাল চালু রেল
দেশে মোট মৃতের সংখ্যা আজ ২১০০ পেরিয়েছে। উত্তর দিল্লি পুরসভার একটি স্কুলের শিক্ষিকা ও তাঁর স্বামী, দু’জনেই আজ করোনায় মারা যান। হাসপাতালগুলিকে দিল্লি সরকার বলেছে, মৃত্যুর সংখ্যা জানাতে দেরি হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল বলেন, রাজধানীর প্রায় ৭৫ শতাংশ রোগী হয় উপসর্গহীন অথবা খুবই হালকা উপসর্গ রয়েছে তাঁদের। এই রোগীদের বাড়িতেই চিকিৎসা চলছে, সরকারি পরিদর্শক দল তাঁদের বাড়িতে যাচ্ছে। তাঁদের কোভিড-কেন্দ্রে আনার ব্যবস্থাও রয়েছে। এ দিকে, রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈঠকে ক্যাবিনেট সচিব আজ বলেছেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের গতিবিধি যেন বাধা না-পায়। করোনার প্রতিষেধক তৈরির গবেষণার জন্য তহবিল নিয়ে সক্রিয় হয়েছে জৈবপ্রযুক্তি মন্ত্রকও।
আরও পড়ুন: এ দিকে ফেরার ট্রেন, ও দিকে থমকে সুযোগ
আবু ধাবি থেকে কেরলে ফেরা আরও ৩ জনের আজ করোনা ধরা পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের মতে, করোনা-পরীক্ষা না-করেই যে ভাবে ভারতীয়দের নানা দেশ থেকে ফেরানো হচ্ছে, তা ঝুঁকির। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন অবশ্য বলছেন, ‘‘করোনা-যুদ্ধে দ্রুত সাফল্যের পথে এগোচ্ছে ভারত।’’ তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েনি। সুস্থ হওয়ার হারও বেড়ে হয়েছে ৩০ শতাংশ। বস্তুত, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫১১ জন সুস্থ হয়েছেন, যা রেকর্ড।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)