সংসদে দুষ্মন্ত সিংহ (রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের পিছনে চিহ্নিত)। করোনা আক্রান্ত গায়িকা কণিকা কপূরের সঙ্গে একটি পার্টিতে হাজির থাকার পরে নিয়মিত সংসদেও গিয়েছেন দুষ্মন্ত। —নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এ বার বলিউডেও। শুক্রবার ইন্সটাগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর নিজেই জানিয়েছেন সদ্য ব্রিটেন ফেরত গায়িকা কণিকা কপূর। কণিকার সূত্রেই করোনার ত্রাস ঢুকে পড়েছে সংসদের অন্দরেও। বাদ যায়নি রাষ্ট্রপতি ভবন।
সম্প্রতি একটি পার্টিতে কণিকার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে এবং তাঁর ছেলে তথা বিজেপি সাংসদ দুষ্মন্ত সিংহ। ওই পার্টির পরে নিয়মিত সংসদে গিয়েছেন দুষ্মন্ত। কণিকার করোনা-আক্রান্ত হওয়ার খবর জানার পরেই বসুন্ধরা আজ টুইট করে জানিয়েছেন, সতর্কতার খাতিরে তিনি ও তাঁর ছেলে ‘গৃহবন্দি’ থাকবেন।
গত ক’দিনে সংসদ ভবন ঘুরে ঘুরে যাদের সঙ্গে দুষ্মন্ত দেখা করেছেন, যে সংসদীয় কমিটির বৈঠক করেছেন, যে সাংসদদের সঙ্গে সেন্ট্রাল হলে বসে আড্ডা মেরেছেন, তাঁদের সকলকেই আইসোলেশনে যেতে বলা হয়েছে। গত ১৮ মার্চ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে রাজস্থানের সাংসদদের যে দলটি দেখা করতে গিয়েছিল, তাতে ছিলেন দুষ্মন্ত। আজ আতঙ্ক ছড়িয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবনেও। রাষ্ট্রপতি ভবনের সে দিনের বৈঠকে ছিলেন রাজনাথ সিংহ ও স্মৃতি ইরানির মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও। ফলে উদ্বেগ ছড়িয়েছে ওই দুই মন্ত্রীর মন্ত্রকেও।
আরও পড়ুন: বিবারের জনতা-কার্ফুতে বাতিল হচ্ছে প্রায় ৩৭০০ ট্রেন
কণিকা-পর্বের পরে স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গেও দুষ্মন্ত বৈঠক করেন বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন জানান, তিনি সংসদে দুষ্মন্তের পাশেই বসেছিলেন। ডেরেক বলেছেন, ‘‘এই (বিজেপি) সরকার সকলকে বিপদে ফেলছে। দেশবাসীকে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়ে সংসদ খোলা রেখেছে।’’ ডেরেক জানান, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তিনি আইসোলেশনে যাচ্ছেন। আইসোলেশনে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন দুষ্মন্তের সংস্পর্শে আসা অনুপ্রিয়া পটেলও।
গত ১০ মার্চ লন্ডন থেকে দেশে ফিরেছেন কণিকা। গায়িকার দাবি, বিমানবন্দরের পরীক্ষায় তিনি সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছিলেন। দিন চারেক আগে প্রথম জ্বর, সর্দি, কাশি-সহ করোনার লক্ষণ ধরা পড়ে তাঁর। তবে চিকিৎসক দেখাতে দেরি করেননি। এই সময়ে লখনউয়ে ছিলেন তিনি। পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানের এক হাসপাতালে তাঁকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়। যদিও ওই হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন কণিকা। তাঁর দাবি, পাশে দাঁড়ানোর বদলে কণিকার বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়েছেন এক চিকিৎসক।
দেশে ফেরার পর লখনউ ও কানপুরে তিনটি পার্টিতে গিয়েছিলেন কণিকা। এর মধ্যে লখনউয়ে প্রাক্তন সাংসদ আকবর আহমেদ ডাম্পির দেওয়া একটি পার্টিতেই কণিকার সঙ্গে আমন্ত্রিত ছিলেন বসুন্ধরা, দুষ্মন্ত, উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জয় প্রতাপ সিংহ-সহ অনেকে। বসুন্ধরা ও দুষ্মন্তর মতোই জয়প্রতাপও গৃহবন্দি থাকার কথা জানিয়েছেন। কানপুর, লখনউ-সহ রাজ্য জুড়ে বহু জায়গা জীবাণুমুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার। একটি সূত্রের খবর, কণিকার বিরুদ্ধে এফআইআর করার কথা ভাবা হচ্ছে সরকারের কোনও কোনও মহলে।