ছবি রয়টার্স।
উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম— দেশের চার প্রান্তের চারটি রাজ্যে করোনা টিকাকরণ প্রক্রিয়ার সার্বিক মহড়া (ড্রাই রান) আজ থেকে শুরু হল। ঘটনাচক্রে, সিরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদার পুনাওয়ালা আজ জানিয়েছেন, কোভিশিল্ড প্রতিষেধক আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ব্রিটেন ও ভারতে জরুরি কারণে ব্যবহারের অনুমতি পাবে। ভারতে কোভিশিল্ডের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ ও উৎপাদনের দায়িত্বে রয়েছে সিরাম।
আগামী বছরের শুরু থেকে ভারতে গণটিকাকরণ অভিযান শুরুর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র। সেই কাজ যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয়, তার জন্য আজ পঞ্জাব, অন্ধ্রপ্রদেশ, অসম ও গুজরাতে দু’দিনের টিকাকরণের মহড়া শিবির চালু করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। প্রতিটি রাজ্যের দু’টি করে জেলা বেছে নিয়ে ওই মহড়া চালানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, সত্যিকারের প্রতিষেধক দেওয়ার সময়ে কী ধরনের প্রতিবন্ধকতা ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে, তা বুঝতে এই মহড়া। আজ ও আগামিকালের ওই শিবিরে কো-উইনের মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে যাঁরা নাম লিখিয়েছেন, তাঁদের পরিচয়পত্র যাচাই, নাম নথিভুক্তিকরণ, টিকাকরণ (ওষুধ ছাড়া), কারও শরীর খারাপ হলে কী ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে— তার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখা হয়। হিমঘর থেকে শিবিরে প্রতিষেধক নিয়ে যাওয়া এবং শিবিরে ওই প্রতিষেধকের সংরক্ষণে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে তা-ও খতিয়ে দেখা হয়।
বাজারে করোনা টিকা আসার পরেও জোগান সীমিত হওয়ায় আগামী ছ’মাসে বিশ্বে প্রতিষেধকের ঘাটতি দেখা যাবে বলে মনে করছেন পুনাওয়ালা। আজ তিনি দাবি করেছেন, সিরাম প্রায় চার থেকে পাঁচ কোটি প্রতিষেধক তৈরি করে ফেলেছে। পুনাওয়ালার আশা, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থার তৈরি কোভিশিল্ড প্রতিষেধক আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ব্রিটেন ও ভারতে জরুরি কারণে ব্যবহারের
অনুমতি পাবে। তিনি বলেন, ‘‘কোভিশিল্ড সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য দু’দেশেই জমা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা পরীক্ষা করে দেখছেন।’’ আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই কোভিশিল্ড ছাড়পত্র পেয়ে যাবে বলে আশাবাদী পুনাওয়ালা। তাঁর কথায়, ‘‘ছাড়পত্র পাওয়ার পরে স্বভাবতই প্রতিষেধকের উৎপাদন বাড়ানো হবে। সে ক্ষেত্রে কী পরিমাণ প্রতিষেধক প্রয়োজন তা সরকারের উপর নির্ভর করছে।’’
সূত্রের মতে, ছাড়পত্র পাওয়ার পরই ভারত-তথা গোটা বিশ্বের কথা ভেবে উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিরাম। ছাড়পত্র পেলে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে আরও ৩০ কোটি কোভিশিল্ড উৎপাদন করে ফেলতে সক্ষম হবে ওই সংস্থা। যার অর্ধেক ব্যবহার হবে ভারতে।পুনাওয়ালার দাবি, যদি মার্চের মধ্যে সংস্থার নতুন উৎপাদন কেন্দ্রটি চালু হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে প্রতি মাসে ১০ কোটি প্রতিষেধক উৎপাদন হবে। তবে ভারত যে হেতু ‘কোভ্যাক্স’-এর অংশ সেই কারণে সিরাম যে প্রতিষেধক উৎপাদন করবে, তার পঞ্চাশ শতাংশ ভারতবাসীর উপরে ব্যবহার হবে।