প্রতীকী ছবি।
একই প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় নয়, বরং দু’টি আলাদা সংস্থার প্রতিষেধকের একটি করে ডোজ় শরীরে প্রয়োগ করলে করোনার বিরুদ্ধে অনেক বেশি কার্যকর প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন স্পেনীয় গবেষকদের একটি দল। তবে বিষয়টি তাত্ত্বিক ভাবে সম্ভব হলেও ভারতে এ নিয়ে কোনও গবেষণা না-হওয়ায় অদূর ভবিষ্যতে এমন কোনও পদক্ষেপের কথা ভাবা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।
মিশ্র প্রতিষেধকের প্রভাব নিয়ে স্পেনীয় গবেষকদের একটি গবেষণা গত ১৯ মে ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, স্পেনে ৬৬৩ জন স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা এবং ফাইজ়ার-বায়োএনটেক সংস্থার প্রতিষেধক প্রয়োগের পরে অনেক বেশি কার্যকর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীদের প্রথমে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছিল। এঁদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ স্বেচ্ছাসেবীকে আট সপ্তাহ পরে ফাইজ়ার-বায়োএনটেকের প্রতিষেধক দেওয়া হয়। তাতে দেখা গিয়েছে, আলাদা প্রতিষেধকের একটি করে ডোজ়ের প্রয়োগে স্বেচ্ছাসেবীদের শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে অধিক শক্তিশালী ও কার্যকর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, যাঁরা দু’টি আলাদা প্রতিষেধকের ডোজ় পেয়েছেন, তাঁদের শরীরে অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে এবং সেই অ্যান্টিবডিগুলি করোনাভাইরাসকে চিহ্নিত করে তাকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়েছে। অতীতে ইবোলা ভাইরাসের বিরুদ্ধে এই ‘মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ’ কৌশল নিয়ে সফল হয়েছিলেন গবেষকেরা।
ভারতে করোনার প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় নিয়েও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এ দেশে গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার কোভিশিল্ড প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ়ের পরেই শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হতে শুরু করেছে। সেখানে কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে শরীর করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হচ্ছে দ্বিতীয় ডোজ়টি নেওয়ার পরে। যদিও কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ়ের পরেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কেউ কেউ। এ ভাবে প্রতিষেধক নিয়েও আক্রান্ত হওয়া রুখতে বিদেশের মতো এ দেশেও ‘মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ’ কৌশল নিয়ে ভাবা হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে আজ নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পল জানান, নীতিগত ভাবে এ ধরনের প্রয়োগ করায় কোনও সমস্যা নেই। তা সফল হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে ভারতে এই ধরনের কোনও প্রয়োগ হয়নি। ফলে তত্ত্বগত ভাবে দু’রকম প্রতিষেধক প্রয়োগের কার্যকারিতা থাকলেও এর যথেষ্ট ব্যবহারিক প্রমাণ এখনও হাতে আসেনি। ভবিষ্যৎ গবেষণার ভিত্তিতেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।