প্রতীকী ছবি।
আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়ে গেল ১৭ লক্ষ। যদিও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলছে, আক্রান্ত ১৬ লক্ষ ৯৬ হাজারের কাছাকাছি। পাশাপাশি, লকডাউন শুরুর পাঁচ মাস পরে দেশে কোভিডে মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম বলে দাবি করল মন্ত্রক। জুনের মাঝামাঝি ৩.৩৩ শতাংশ থেকে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২.১৫ শতাংশে, মার্চে প্রথম দফার লকডাউন শুরুর পর থেকে যা সর্বনিম্ন। মন্ত্রক বলেছে, ‘‘দেশে করোনায় সুস্থতার হার বর্তমানে ৬৪.৫৩ শতাংশ। ব্যাপক হারে পরীক্ষার ফলে শুরুতেই রোগ নির্ণয় ও হাসপাতালে যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে আমরা মৃতের হার কমিয়ে আনতে সফল হয়েছি।’’ তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ভারতে মৃত্যুর হার বরাবর সর্বনিম্ন থেকেছে।
মৃত্যুর হার কমায় দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি ভেন্টিলেটর রফতানির প্রস্তাবে সুবজ সঙ্কেত দিয়েছে উচ্চপর্যায়ের মন্ত্রিগোষ্ঠী। মার্চে এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বক্তব্য, রফতানিতে ছাড় মিললে ভারতে প্রস্তুত ভেন্টিলেটরের চাহিদা তৈরি হবে বিদেশে। দেশেও ভেন্টিলেন্টর তৈরির ক্ষমতা ক্রমশ উন্নত হচ্ছে বলে মত মন্ত্রকের। এখন ২০টিরও বেশি সংস্থা দেশে ভেন্টিলেটর প্রস্তুত করছে।
তবে মৃত্যুহার কমলেও স্বস্তি মিলছে না এখনই। কারণ পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। আজ নিয়ে টানা তিন দিন দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাপিয়েছে। দেশে মোট আক্রান্তের ৬৫ শতাংশের বেশি শুধু জুলাইয়েই করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে সরকারকে। সেখানে শুধু জুলাইয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ২৬ হাজারের বেশি। জুনে যেখানে সে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৫ হাজারের কাছাকাছি, জুলাইয়ে তা একলাফে বেড়েছে ৮৬৫ শতাংশ। দেশের বাকি রাজ্যগুলির তুলনায় সর্বাধিক। যার ফলে সংক্রমণের নিরিখে দিল্লিকে ছাপিয়ে গত কালই অন্ধ্র তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। আজ করোনায় মৃত্যু হয়েছে বিজেপি নেতা ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মাণিকেলা রাওয়ের।
এ দিকে, করোনাকালে গুজরাতের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠলেও আমদাবাদ যে ভাবে কোভিড পরিস্থিতি সামলেছে, তার প্রশংসা করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা আজ জানাল, গোটা দেশে, এমনকি দেশের বাইরেও কোভিড চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণে ‘কেস স্টাডি’ হিসেবে আমদাবাদকে সামনে রেখে এগোনো উচিত। গুজরাতের বাকি শহরগুলিতে করোনা-পরীক্ষার হার বাড়ানো হয়েছে (জুলাইয়ে ৩ লক্ষ ৯১ হাজারের বেশি) বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। তাদের দাবি, গুজরাতে সুস্থতার হার ৭৩.৯%, যা অন্য রাজ্যের তুলনায় সর্বাধিক।
মানবদেহে করোনার সম্ভাব্য টিকা কোভ্যাক্সিনের ট্রায়াল শুরু হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের মোট ১২টি প্রতিষ্ঠানে । এর মধ্যেই অর্থনীতি সচল করতে দিল্লির হোটেল ও সাপ্তাহিক বাজারগুলি খুলে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে গত কাল উপরাজ্যপাল অনিল বৈজলকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। তা খারিজ হয়েছে। আজ ফের একই আর্জি জানিয়ে অমিত শাহকে চিঠি লেখেন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া।