গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দেশ জুড়ে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের থেকে এক ধাক্কায় বাড়ল প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। সেই সঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিতের তুলনায় কমেছে সুস্থ রোগীর সংখ্যাও। ওই সময়ের মধ্যে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যাও ছাপিয়ে গিয়েছে আগের দিনের পরিসংখ্যানকে। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় প্রভাব পড়েছে ২৪ ঘণ্টার সংক্রমণের হার বা ‘পজিটিভিটি রেট’-এ। তবে দৈনিক সুস্থতার হার একই রয়েছে।
শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ১৪৩ জন। শুক্রবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৩০৯। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে দেশ জুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছল ১ কোটি ৮ লক্ষ ৯২ হাজার ৭৪৬-তে। তবে তার মধ্যে ১ কোটি ৬ লক্ষ ৬২৫ জনই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ফলে এই মুহূর্তে দেশে সক্রিয় রোগীর রয়েছেন ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৫৭১ জন।
শনিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, দৈনিক সুস্থতার হার শুক্রবারের মতোই ৯৭.৩২ শতাংশ রয়েছে। সংখ্যার নিরিখে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৩৯৫ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
শুক্রবারের তুলনায় কমলেও দৈনিক সুস্থ রোগীর সংখ্যা কমলেও বেড়েছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। প্রতি দিন যে সংখ্যক কোভিড টেস্ট করা হয়, তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। শুক্রবারের তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড টেস্ট কম হলেও সংক্রমিতের সংখ্যা ওই দিনের তুলনায় বেড়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসাব অনুযায়ী, ওই সময়ের মধ্যে ৭ লক্ষ ৪ হাজারেরও বেশি কোভিড টেস্ট হয়েছে। তবে ওই সংখ্যক টেস্টের মধ্যে দৈনিক আক্রান্তের নিরিখে সংক্রমণের হার হয়েছে ১.৬৩ শতাংশ।
দৈনিক আক্রান্তের মতোই দেশ জুড়ে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০০-র ঘর। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১০৩ জন রোগী মারা গিয়েছেন। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ৫৫০।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের নিরিখে রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে প্রথমে রয়েছে কেরল। ওই রাজ্যে ৫ হাজার ৩৯৭ জনের মধ্যে নতুন করে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। অন্য দিকে, মহারাষ্ট্রে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩ হাজারেরও বেশি। পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। শুক্রবার রাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮৮ জন। অন্য দিকে, ওই সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২৬৪ জন কোভিড রোগী।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)