ছবি: সংগৃহীত।
নোভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোভিড টিকার প্রভাব কার্যকর থাকতে পারে ন’মাস থেকে এক বছর। এমনটাই দাবি করলেন অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সেস (এমস)-এর ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কোভিড টিকার কার্যকারিতা ন’মাস থেকে এক বছর স্থায়ী হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।” পাশাপাশি, তাঁর আরও দাবি, ২০২৩ সালের মধ্যে করোনার মতো অতিমারির সমাপ্তির কথা ঘোষণা করতে পারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
কোভিড-১৯ টিকা বাজারে না এলেও তা নিয়ে সম্ভাবনার পাশাপাশি সতর্কবার্তা শুনিয়েছেন এমস ডিরেক্টর। তাঁর মতে, “কোভিডের মতো অতিমারি খুব শীঘ্রই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে, এমনটা ভাবা ভুল হবে। বরং এই ভাইরাসের প্রকোপ আরও কিছুকাল স্থায়ী হবে।” তবে ২০২৩ সালে হু কেন এই অতিমারি সমাপ্তির কথা ঘোষণা করতে পারে? এই প্রশ্নের জবাবে গুলেরিয়ার দাবি, “অতিমারির মতো ভয়াবহ আকার ছেড়ে হয়তো একটি সাধারণ রোগে পরিণত হবে কোভিড-১৯।”
কী ভাবে করোনাভাইরাসের মারণক্ষমতা কমবে, তা-ও জানিয়েছেন গুলেরিয়া। তাঁর মতে, কোভিড সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে হাতিয়ার হয়ে উঠবে এর টিকা। জনসংখ্যার একটা বড় অংশের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতেও সাহায্য করবে এটি। ফলে ২০২৩ সালের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার আরও কমে যাবে বলে মনে করছেন তিনি।
আরও পড়ুন: রাতে কার্ফু জারি করে কোভিড নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়, মত বিশেষজ্ঞদের
আরও পড়ুন: বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য প্রতি ৬৯ হাজার পেট্রল পাম্পে ১টি ই-চার্জিং কিয়স্ক, জানালেন গডকড়ী
এই মুহূর্তে দেশে অন্তত পাঁচটি কোভিড ভ্যাকসিন বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। কোভিড টিকার দৌড়ে প্রথমেই রয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ‘কোভিশিল্ড’। পুণের সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউ অব ইন্ডিয়া (এসআইআই) যা পরীক্ষা ও উৎপাদনের দায়িত্বে রয়েছে। ‘কোভিশিল্ড’-এর পরীক্ষা তৃতীয় পর্যায়ের শেষ পর্বে রয়েছে। এসআইআই ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে ‘কোভিশিল্ড’ ব্যবহারের অনুমোদন প্রাপ্তির চেষ্টা করবে তারা।
‘কোভিশিল্ড’ ছাড়াও ভারতের বাজার দখলের দৌড়ে রয়েছে ভারত বায়োটেকের টিকা ‘কোভ্যাক্সিন’, জাইডাস ক্যাডিলার তৈরি ‘জাইকোভ ডি’, রাশিয়ার ‘স্পুটনিক-ভি’ এবং হায়দরাবাদের একটি ওষুধ সংস্থার তৈরি ‘বায়োলজিক্যাল ই’-র মতো ভ্যাকসিন।
অতিমারি বিরুদ্ধে লড়াইতে এমস ডিরেক্টরের মন্তব্য আশা জাগালে কোভিড-১৯ নিয়ে তাঁর লেখা বই ‘টিল উই উইন’-এর সহ-লেখক গগনদীপ কাঙ অবশ্য জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে এখনও যথেষ্ট সময় লাগবে। তাঁর কথায়, “আমরা আগের মতো অর্থাৎ ২০১৯-এর অবস্থায় আর ফিরে পাব না। তবে বছর দুয়েকের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার একটা আভাস পেতে পারি মাত্র।”