প্রতীকী ছবি।
কোভিডের টিকা নেওয়া এ দেশের কোনও নাগরিকের জন্যই বাধ্যতামূলক নয়। তবে যাঁরা টিকা নিতে ইচ্ছুক, তাঁদের অনলাইনে নাম নথিভুক্ত করাতে হবে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে মন্ত্রকের পরামর্শ, করোনার সংক্রমণ রুখতে ২৮ দিনের ব্যবধানে টিকার দু’টি ডোজ অবশ্যই নিতে হবে।
কোভিড টিকাকরণ নিয়ে এখনও বহু মানুষের মনে ধোঁয়াশা রয়েছে। তা কাটাতে বৃহস্পতিবার রাতে টিকাকরণ নিয়ে একাধিক প্রশ্নের জবাব মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে তুলে ধরা হয়েছে। মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, “কোভিড-১৯-এর টিকাকরণ পুরোপুরি স্বেচ্ছামূলক। যদিও পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধব, সহকর্মীদের করোনার সংক্রমণের থেকে রুখতে প্রত্যেককেই ভ্যাকসিনের পুরো ডোজ নিতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”
কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে একগুচ্ছ প্রশ্নের জবাব দিয়ে ভারতে তৈরি কোভিড টিকার গুণগত মান নিয়ে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেছে মন্ত্রক। মন্ত্রকের দাবি, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই এ দেশে তৈরি কোভিড টিকা পুরোপুরি সুরক্ষিত। সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের পরই তা বাজারে ছাড়া হবে।
আরও পড়ুন: নতুন আইন নিয়ে কৃষকদের কাছে করজোড়ে প্রার্থনা মোদীর
সেই সঙ্গে জানানো হয়েছে, যাঁরা স্বেচ্ছায় টিকা নিয়ে চান, তাঁদের নিজের নাম এবং ফোটো-সহ পরিচয়পত্র দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স, মনরেগা-র জব কার্ড, প্যান কার্ড, ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের পাসবই, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার আইডি কার্ড অথবা ভোটার কার্ড— এর যে কোনও একটি জমা করলেই চলবে। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের পর টিকা নিতে ইচ্ছুকদের নথিভুক্ত করা মোবাইল নম্বরে সমস্ত তথ্য দেওয়া হবে। টিকাকরণের দিনক্ষণ বা কোথায় তা হবে, সে সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে। ক্যানসার বা ডায়াবিটিসে আক্রান্তদের বা যাঁরা সম্প্রতি করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদেরও টিকাকরণে অংশ নিতে পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ করেই খুন হাথরসের নির্যাতিতা, চার্জশিটে বলল সিবিআই
এই মুহূর্তে ভারতে ছ’টি কোভিড টিকার ট্রায়াল চলছে। আইসিএমআর এবং ভারত বায়োটেকের তৈরি টিকা, জাইডাস ক্যাডিলা, জেনোভা, অক্সফোর্ডের টিকা কোভিশিল্ড, রাশিয়ার টিকা স্পুটনিক ভি এবং বায়োলজিক্যাল ই এবং আমেরিকার এমআইটি-র তৈরি টিকা— এই ছ’টি টিকা এই মুহূর্তে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বিভিন্ন স্তরে রয়েছে। এর মধ্যে কোন টিকাটি নেওয়া সুরক্ষিত? এই প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রক জানিয়েছে, প্রতিটি টিকাই যথাযথ ভাবে পরীক্ষার পর বাজারে ছাড়া হবে। মন্তকের তরফে বলা হয়েছে, “সুরক্ষা নিশ্চিত করার পরই কোভিড ভ্যাকসিন বাজারে ছাড়া হবে। তবে অন্যান্য সব ভ্যাকসিনের মতোই এই টিকা নেওয়ার পর ব্যথা বা সামান্য জ্বরের উপসর্গ দেখা দিতে পারে।”
টিকাকরণের পর তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে কোনও সমস্যা হলে তা যাতে মেটানো যায়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকে পরিকাঠামো গড়ে তুলতে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রক। সেই সঙ্গে কোভিড টিকা বাজারে এলে তা দেশের সকলকে প্রথমে দেওয়া যাবে না বলেও জানানো হয়েছে। বরং করোনা-যুদ্ধে শামিল সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী যেমন স্বাস্থ্যকর্মী, কোমর্বিড বা ৫০-এর বেশি বয়সি ব্যক্তিরাই যে অগ্রাধিকার পাবেন, তা-ও জানিয়েছে মন্ত্রক।