—ফাইল চিত্র।
এক দিকে লকডাউন শিথিল হতে শুরু করেছে। অন্য দিকে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ঘরে ফিরছেন। এই দুইয়ের ধাক্কায় পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা পূর্ব ভারতে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ১৮ মে-র পর থেকে দেশের ৯৮টি নতুন জেলায় সংক্রমণ ছড়িয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি জেলাই পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ও ছত্তীসগঢ়ের। যা থেকে স্পষ্ট, সংক্রমণ এখন পূর্ব ভারতের দিকে ছড়াচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রথম থেকেই অবস্থান ছিল, শ্রমিকদের ট্রেনে করে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে নিয়ে গেলে ভাইরাস আরও ছড়াবে। তার বদলে যে যেখানে আছেন, সেখানেই থাকুন। সেখানেই তাঁদের দেখভালের বন্দোবস্ত হোক। কিন্তু কেন্দ্র ১ মে থেকে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালু করে দেয়। ১৮ মে চতুর্থ দফার লকডাউনও শিথিল হওয়া শুরু হয়। তার পর থেকে পরিস্থিতি যে দিকে এগিয়েছে, তাতে পশ্চিমবঙ্গের যথেষ্ট চিন্তার কারণ রয়েছে বলেই মত কেন্দ্রের। ‘উদ্বেগের কারণ’ হয়ে ওঠা ৯৮টি জেলায় সংক্রমিত চারশোর বেশি। যার অর্ধেক ধরা পড়েছে ১৮ মে-র পরে।
এই মূহুর্তে দেশে করোনার কেন্দ্র বা ‘এপিসেন্টার’ হল ৩০টি জেলা। যেখানে এখন ৭২% করোনা-আক্রান্ত রয়েছেন। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, দিল্লি ও মহারাষ্ট্রের ২৩টি জেলা অতিরিক্ত চিন্তার বিষয়। জেলাগুলি মূলত শহরাঞ্চল। গত কাল রাতে ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কেন্দ্রের তরফে দেখানো হয়, দেশে আধ ডজন রাজ্যেই মোট কোভিড পজ়িটিভের ৭৬% রয়েছেন। রাজ্যগুলি হল—পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লি তামিলনাড়ু ও রাজস্থান। এই রাজ্যগুলির জন্য আরও কন্টেনমেন্ট এলাকা, নমুনা পরীক্ষা, চিহ্নিতকরণ ও স্বাস্থ্য পরিকাঠামো বাড়ানোই একমাত্র দাওয়াই বলে মনে করছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ১০৯৫৬, মোট আক্রান্তে ব্রিটেনকে টপকে বিশ্বে চতুর্থ ভারত
আরও পড়ুন: মৃতের অমর্যাদায় ক্ষুব্ধ সুপ্রিম কোর্ট, বাংলা-সহ ৫ রাজ্যকে নোটিস
মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে যে সব রাজ্য চিন্তার কারণ, তার মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে। এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত্যুর ৮২% ঘটনাই ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লি, ও মধ্যপ্রদেশে। সরকারি হিসেবে, ১৩টি রাজ্যের ৬৯টি জেলায় আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার ৫ শতাংশের বেশি। যা চিন্তার কারণ। এর মধ্যে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাতের মতো চারটি রাজ্যেই ৫১টি জেলা রয়েছে। শুধু পূর্ব ভারতই নয়। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ১৮ মে-র পর থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতের ৫৩টি জেলাতেও সংক্রমণ ছড়িয়েছে।