দ্বিতীয় দফার লকডাউনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩ মে। রেড জোন এলাকাগুলিতে তার পরেও যে লকডাউন উঠবে না, তার ইঙ্গিত মিলেছিল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের সর্বশেষ বৈঠকেই। কিন্তু অরেঞ্জ এবং গ্রিন জোনগুলিতে কী ভাবে বা কতটা শিথিল করা হবে লকডাউন, তা ঠিক করতে নতুন রেড, অরেঞ্জ ও গ্রিন জোনের তালিকা ঘোষণা করল কেন্দ্র।
আগামী ৩ মে-র পরেও এই জেলাগুলি রেড, অরেঞ্জ বা গ্রিন জোনে থাকবে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সচিব প্রীতি সুদান রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মুখ্যসচিবদের চিঠি পাঠিয়ে নয়া এই তালিকা দিয়েছেন এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
রাজ্য সরকারগুলির মুখ্যসচিব এবং সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এই তালিকা তৈরি করেছে। শুক্রবারই সেই তালিকা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। তবে রাজ্য সরকারগুলি সরেজমিনে খতিয়ে দেখে নতুন কোনও জেলা রেড, অরেঞ্জ বা গ্রিন জোনে রাখতে পারে বলেও জানিয়েছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক যে তালিকা দিয়েছে, তাতে কলকাতা-সহ সব দেশের সব কটি মেট্রো সিটিই থাকছে রেড জোনের মধ্যে। কলকাতা ছাড়া তালিকায় রয়েছে দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু এবং আমদাবাদ।
কেন্দ্রের তালিকা অনুযায়ী দেশের ১৩০টি জেলা রয়েছে রেড জোনে। ২৮৪টি জেলা অরেঞ্জ এবং ৩১৯টি জেলা গ্রিন জোন তালিকাভুক্ত হয়েছে।
বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে এই তালিকা তৈরি হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা এবং তা দ্বিগুণ হওয়ার সময়সীমা, টেস্টের অনুপাত, নজরদারির ব্যবস্থা— এই সব বিষয় মাথায় রেখে রেড জোন বা অরেঞ্জ জোনের তালিকা তৈরি হয়েছে।
কেন্দ্রের নির্দেশিকায় আগে বলা হয়েছিল, ২৮ দিনের মধ্যে নতুন করে কেউ কোভিড আক্রান্ত না হলে সেই এলাকাকে গ্রিন জোন হিসেবে ধরা হবে। তবে নতুন নির্দেশিকায় সেই সময়সীমা কমিয়ে ২১ দিন করা হয়েছে। অর্থাৎ ২১ দিনের মধ্যে নতুন আক্রান্তের সন্ধান না মিললে সেই জেলা গ্রিন জোন তালিকায় পড়বে।
দিল্লির ১১টি জেলাকেই রেড জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ এখানকার সব জেলাতেই করোনাভাইরাস আক্রান্ত রয়েছে এবং ৩ মে-র পরেও সর্বত্র চূড়ান্ত নজরদারি থাকবে।
জেলার সংখ্যা ধরলে দেশের মধ্যে উত্তরপ্রদেশে রয়েছে সবচেয়ে বেশি রেড জোন। যোগীর রাজ্যে ৭৫টির মধ্যে ১৯টি রেড জোন জেলা, ৩৬টি অরেঞ্জ জোন এবং ২০টি গ্রিন জোন তালিকাভুক্ত।
মহারাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। এই রাজ্যে ১৪টি রেড জোন জেলা। অরেঞ্জ তালিকায় ১৬টি এবং গ্রিন জোনে রয়েছে ৬টি জেলা।
তামিলনাড়ুর ১২টি জেলা রেড জোনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ ছাড়া গুজরাত ও মধ্যপ্রদেশে ৯টি করে এবং মধ্যপ্রদেশে ৮টি রেড জোন জেলা রয়েছে।
অরেঞ্জ তালিকায় রয়েছে বিহারের ২০টি, তামিলনাড়ুতে ২৪, রাজস্থানে ১৯, পঞ্জাবে ১৫টি এবং মধ্যপ্রদেশের ১৬টি জেলা।
গ্রিন জোন সবচেয়ে বেশি জেলা উত্তরপূর্বের রাজ্য অসমে (৩০)টি। আবার উত্তর-পূর্বেরই আর এক রাজ্য সিকিমের চারটির সবক’টি জেলাই গ্রিন জোন তালিকাভুক্ত হয়েছে। অর্থাৎ সিকিমে কোনও করোনা আক্রান্ত রোগী নেই।
ছত্তীসগঢ়ে ২৫, অরুণাচল প্রদেশে ২৫, মধ্যপ্রদেশে ২৪, ওড়িশায় ২১, উত্তরপ্রদেশে ২০ এবং উত্তরাখণ্ডে ১০টি জেলা গ্রিন জোন রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের ২৩টি জেলার মধ্যে ১০টি রয়েছে রেড জোনের তালিকায়। ৫টি জেলা অরেঞ্জ এবং৮টি জেলায় কোনও সংক্রমণ নেই, অর্থাৎ গ্রিন জোন।