প্রতীকী ছবি।
আগামী জুলাইয়ের মধ্যে অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকা ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
বর্তমানে দেশে ভারত বায়োটেকের ‘কোভ্যাক্সিন’, অক্সফোর্ডের ‘কোভিশিল্ড’ ও রাশিয়ার ‘স্পুটনিক-ভি’ প্রতিষেধক মানব শরীরে প্রয়োগের তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে। আজ এই দৌড়ে যোগ দিল আমদাবাদের জ়াইডাস ক্যাডিলা সংস্থা। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, তাঁদের প্রতিষেধক (জেডওয়াইআইএল-১) মানব শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ছাড়পত্র পেয়েছে। সংস্থার চেয়ারম্যান পঙ্কজ আর পটেল জানান, প্রথম পর্বের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর এই প্রতিষেধক কতটা নিরাপদ ও শরীরে কোনও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি ঘুরে দেখেছিলেন, তার মধ্যে আমদাবাদের এই সংস্থাটিও ছিল।
আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চ থেকেই টিকা প্রদান শুরু করতে চায় সরকার। জুলাইয়ের মধ্যে ৩০ কোটি ভারতীয়কে প্রতিষেধক দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। প্রতিষেধক হিসেবে ‘কোভিশিল্ড’ ব্যবহার করলে ৬০ কোটি ডোজ়ের প্রয়োজন। কারণ, এটি দু’ডোজ়ের টিকা। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ সরবরাহ সম্ভব কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের মতে, তত দিনে বাজারে চলে আসবে আরও কয়েকটি প্রতিষেধক। ফলে ওই প্রতিষেধক দিয়ে ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে। এক প্রশাসনিক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, এপ্রিলের মধ্যে ভারতের হাতে চারটি প্রতিষেধক চলে আসবে। ফলে জুন-জুলাইয়ের মধ্যে অগ্রাধিকারপ্রাপ্তদের টিকা দেওয়ার কাজ শেষ করা যাবে। ‘কোভিশিল্ড’, ‘কোভ্যাক্সিন’ ছাড়াও ফাইজ়ার ও রাশিয়ার তৈরি করোনা-টিকার উপরে ভরসা করছে ভারত।
আরও পড়ুন: জরুরি ভিত্তিতে টিকা ব্যবহারের আবেদন জানাল ভারত বায়োটেক
আরও পড়ুন: দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৪ লক্ষের কম, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু কমে ৩৯১
একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, রাশিয়ার থেকে ‘স্পুটনিক-ভি’-র ১০ কোটি ডোজ় কিনতে চলেছে মোদী সরকার। পুণের নোবেল হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল রিসার্চ বিভাগের প্রধান এস কে রাউত বলেছেন, ‘‘গত বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিন ১৭ জন স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে স্পুটনিক-ভি প্রয়োগ করা হয়েছে। প্রতিষেধকের প্রতিক্রিয়া জানতে স্বেচ্ছাসেবীদের উপরে নজর রাখা হবে।’’
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যানে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সামান্য হলেও স্বস্তির ইঙ্গিত। অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা চার লক্ষের নীচে (৩,৯৬,৭২৯)। কমেছে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যাও। কয়েকটি রাজ্যে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও কেরলের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, কেরলে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ৭৭৭ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। যা দেশের মধ্যে সর্বাধিক। ওই সময়ের মধ্যে দক্ষিণের এই রাজ্যে ২৮ জন করোনা-আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমণে রাশ টানতে আমদাবাদে রাতের কার্ফুর মেয়াদ আরও বাড়িয়েছে প্রশাসন।