গুজরাতের আমেদাবাদে কেন্দ্রীয় দল। ছবি পিটিআই।
গত সপ্তাহে হরিয়ানা, রাজস্থান, গুজরাত ও মণিপুরে দল পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করতে এ বার হিমাচলপ্রদেশ, পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়—এই চার রাজ্যেও গেল কেন্দ্রীয় দল।
কেন্দ্রের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘ওই চার রাজ্যের যে যে জেলায় সংক্রমণের হার তীব্র সেগুলিতে যাবে তিন সদস্যের কেন্দ্রীয় দল। করোনা-পরীক্ষা, নজরদারি, সংক্রমণ প্রতিরোধ, পজ়িটিভ রোগীর ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ, কনটেনমেন্ট-বিধি নির্দিষ্ট করতে সাহায্য করবে রাজ্য সরকারকে।’’
নতুন করে ৪৫ হাজার ২০৯ জন আক্রান্ত হওয়ায় আজ দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৯০ লক্ষ ৯৫ হাজার ৮০৬। মৃত্যু হয়েছে ৫০১ জনের। শুধু দিল্লিতেই ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ৬ হাজারের কাছাকাছি। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজধানীর সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে গত পাঁচ দিনে চারশোর বেশি আইসিইউ বেড বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: মস্তিষ্কে হানা করোনার, চিন্তা বাড়ছে চিকিৎসকদের
পরিস্থিতি সঙ্কটজনক হওয়ায় বিমান, বাস বা ট্রেনে দিল্লি থেকে কেউ এলে বাধ্যতামূলভাবে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে হরিয়ানার গুরুগ্রাম ও ফরিদাবাদ এবং উত্তরপ্রদেশের গৌতমবুদ্ধ নগরে।
এই পরিস্থিতি শনিবার জি ২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, অতিমারি সঙ্কট থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়ার জন্য দেশগুলিকে একজোট হয়ে লড়াই করতে হবে। বিদেশ মন্ত্রকের কথায়, ‘‘কোভিড অতিমারি মানবজাতির ইতিহাসকে এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে এনে হাজির করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে আর এত বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়নি সারা বিশ্ব।’’ এই অবস্থায় টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি নানাবিধ আশ্বাস দিলেও কার্যকর প্রতিষেধক কবে বাজারে আসবে তা নিয়ে সংশয় কাটছে না। ভারত বায়োটেক যেমন জানিয়েছে, আগামী বছর জুলাইয়ের মধ্যে বাজারে চলে আসবে তাদের টিকা কোভ্যাক্সিন। যেটি ৬০ শতাংশ কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন: টিকা প্রস্তুতি: মোদী-মমতা মুখোমুখি কাল, ক্ষোভ জানাতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী
সংস্থার শীর্ষ কর্তারা জানিয়েছেন, শ্বাসযন্ত্রের সুরক্ষায় কোনও টিকা ৫০ শতাংশ কার্যকর হলেই তাতে অনুমোদন দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং ভারতে কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনা আরও বেশি। অন্তত ৬০ শতাংশ। গত ২০ নভেম্বর হরিয়ানায় তৃতীয় পর্যায়ের টিকা পরীক্ষা করেছে ভারত বায়োটেক। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ২৫টি কেন্দ্রের ২৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের উপরে টিকা পরীক্ষা করা হয়েছে।
গত এক মাসে দেশজুড়ে একাধিক রাজ্যে দ্বিতীয় বা তৃতীয় দফার সংক্রমণের ঢেউ ফিরে এসেছে। আক্রান্ত রাজ্যগুলির শীর্ষে মহারাষ্ট্র। মোট আক্রান্ত প্রায় ১৮ লক্ষ। মোট মৃতের সংখ্যা ৪৬ হাজার।
মহারাষ্ট্রের পরেই রয়েছে কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু। সংক্রমণ হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজস্থানের কোনও কোনও শহরে রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত কার্ফু জারি করেছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে জয়পুর, জোধপুর, উদয়পুর, কোটা, অজমেরের মতো শহর। শনিবার সে রাজ্যে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০০৭ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের।