প্রতীকী ছবি।
এখনও কোভিডের টিকা যথেষ্ট মিলছে না। কিন্তু মোদী সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, অগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে ২১৬ কোটি ডোজ় টিকা তৈরি হবে। টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির যাতে পুঁজির অভাব না-হয়, তার জন্য মোদী সরকার একেবারে অল্প সুদে, সম্ভব হলে বিনা সুদে ঋণের বন্দোবস্ত করতে চাইছে।
তবে এ ক্ষেত্রে শর্ত বেঁধে দেওয়া হতে পারে। সরকারি সূত্রের খবর, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেশে টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারলে কেন্দ্র সুদে পুরোপুরি ভর্তুকি দিয়ে দেবে, এমন শর্ত রাখা হতে পারে। অর্থ মন্ত্রকের সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এ বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির জন্য কী ভাবে ঋণের ক্ষেত্রে সুদে ভর্তুকি দেওয়া যায়, তা খতিয়ে দেখা হয়েছে।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক মে মাসের গোড়াতেই কোভিডের মোকাবিলায় ব্যাঙ্কগুলির জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকার তহবিলের ঘোষণা করেছিল। এই তহবিল থেকে ব্যাঙ্কগুলি প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী, আমদানি ও সরবরাহকারী সংস্থা, অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর ও অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদক ও সরবরাহকারী সংস্থা, হাসপাতাল, প্যাথলজি ল্যাব, ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সহজ শর্তে ঋণ দিতে পারবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ওই ঘোষণার পরে সরকারি-বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি কার্যত স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের এই সব সংস্থাগুলির দরজায় ঋণ দেওয়ার জন্য লাইন দিয়েছে। তবে টিকা সংস্থাগুলি ঋণ নিতে যে বিশেষ উৎসাহ দেখিয়েছে, এমন নয়।
সরকারি সূত্রের দাবি, টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে ঋণের অভাব না হলেও সুদের হার যথেষ্ট চড়া। কেন্দ্র সুদে ভর্তুকি দিলে টিকা তৈরির খরচও কমে যাবে। দামেও তার প্রভাব পড়তে পারে। তা ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টিকা জোগানের লক্ষ্যমাত্রাও বেঁধে দেওয়া যাবে।
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, এত দিন এ দেশে শুধুমাত্র সিরাম ইনস্টিটিউট ও ভারত বায়োটেকই টিকা তৈরি করছিল। এ বার স্পুটনিক-ভি উৎপাদনও শুরু হচ্ছে। এর পর জাইডাস ক্যাডিলা, জেনোভা, বায়োলজিকাল ই-র মতো সংস্থাও টিকা তৈরি শুরু করবে। সিরাম ও ভারত বায়োটেক এত দিন কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন তৈরি করছিল। এর পরে সিরাম নোভাভ্যাক্স তৈরি করবে। ভারত বায়োটেক তৈরি করবে নাজ়াল ভ্যাকসিন। ফলে পুঁজির জন্য ঋণের প্রয়োজন হবে। কেন্দ্রের হিসেবে, এই সংস্থাগুলি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে মোট ২১৬ কোটি ডোজ় টিকা মিলবে। কিন্তু সরকারের লক্ষ্য পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন। বিনা সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে লক্ষ্যপূরণ নিশ্চিত করতে চায় কেন্দ্র।