Covishield

প্রতিষেধক পাঠানোর কাজ শুরু

গণ-টিকাকরণের প্রথম দফার প্রথম পর্বে প্রায় ১ কোটি স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রতিষেধক দেওয়া হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৩৩
Share:

বেঙ্গালুরুতে পৌঁছল টিকা ভর্তি ট্রাক। ছবি পিটিআই।

শনিবার থেকে শুরু হতে চলা প্রথম দফার গণ-টিকাকরণের কথা মাথায় রেখে আজ থেকে রাজ্যে-রাজ্যে প্রতিষেধক পাঠানো শুরু করল কেন্দ্র। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, আজ বিকেল পর্যন্ত ৫৪.৭২ লক্ষ ডোজ় নানা শহরে পাঠানো হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে গোটা দেশে প্রতিষেধক পাঠানোর কাজ সেরে ফেলতে চায় কেন্দ্র।

Advertisement

গণ-টিকাকরণের প্রথম দফার প্রথম পর্বে প্রায় ১ কোটি স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রতিষেধক দেওয়া হবে। তবে আগামী শনিবার ওই এক কোটির মধ্যে কত জন প্রতিষেধক পাবেন, তা স্পষ্ট নয়। এসবিআই সংস্থার করা একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ফি-দিন প্রায় ১৩ লক্ষ মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া কেন্দ্রের লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কাল বলেছিলেন, কোনও রাজনীতিক যেন সময়ের আগেই প্রতিষেধক নিতে না-দৌড়ন। কিন্তু আজ টুইটারে ‘পহেলাটিকামোদীকো’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে প্রচার শুরু হয়েছে। টুইটার ব্যবহারকারীদের একাংশের দাবি, প্রথমে প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে প্রতিষেধকের গুণমান যাচাই হোক। রাশিয়া বা আমেরিকায় রাষ্ট্রনেতারা প্রথমে প্রতিষেধক নিয়েছেন।

গণ-টিকাকরণের জন্য অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা সংস্থার তৈরি কোভিশিল্ড (প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে যা এ দেশে উৎপাদন করছে পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট) এবং হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধককে বেছেছে কেন্দ্র। আজ বিভিন্ন রাজ্যে প্রতিষেধক রওনা হওয়ার পরে সিরাম-কর্তা আদার পুনাওয়ালা টুইটারে জানিয়েছেন, তিনি আবেগরুদ্ধ। সরকার এখনও পর্যন্ত ১.১ কোটি কোভিশিল্ড ও ৫৫ লক্ষ কোভ্যাক্সিন সংগ্রহ করেছে। অধিকাংশ রাজ্যে যে কোনও একটি প্রতিষেধক পাঠানোর চেষ্টা করা হলেও, কিছু রাজ্যে দু’টিই যেতে পারে।

Advertisement

কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফল আসার আগেই সেটি ছাড়পত্র পাওয়ায় কিছুটা বিতর্ক হয়েছে। অনেকে কোভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ কি ইচ্ছে মতো প্রতিষেধক বেছে নিতে পারেন? সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ বলেন, ‘‘পঞ্চাশটির কাছাকাছি দেশে প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বেশ কিছু দেশে একাধিক প্রতিষেধকও ব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু কোনও দেশেই প্রতিষেধকপ্রাপ্তদের প্রতিষেধক বেছে নেওয়ার ক্ষমতা নেই।’’ অর্থাৎ তিনি কার্যত বুঝিয়ে দেন যে, অন্তত গোড়ার দিকে বাছবিচারের সুযোগ নেই।

তবে পরবর্তী সময়ে যাঁরা বাজার থেকে কিনে প্রতিষেধক নেবেন, তাঁদের কাছে ওই সুযোগ থাকবে বলেই ইঙ্গিত স্বাস্থ্যকর্তাদের। আজ স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ‘‘অন্তত আরও চারটি দেশীয় প্রতিষেধক পরীক্ষামূলক প্রয়োগের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে জ়াইডাস ক্যাডিলা। ডিসেম্বরে পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপ শেষ করে চলতি মাস থেকে তৃতীয় ধাপ শুরু করেছে আমদাবাদের সংস্থাটি। রাশিয়ার স্পুটনিক ভি-র দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বের পরীক্ষা শুরু হয়েছে চলতি মাসেই।’’ এ ছাড়া বায়োলজিক্যাল-ই এবং জেনোভার প্রতিষেধক মানবদেহে পরীক্ষার প্রথম ধাপে রয়েছে। সব প্রতিষেধক বাজারে এলে দেশবাসী নিজের পছন্দ অনুযায়ী তা বেছে নিতে সক্ষম হবেন। মন্ত্রকের মতে, সে জন্য এখনও প্রায় অন্তত মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

শনিবার যাঁরা প্রথম প্রতিষেধক পাবেন, তাঁদের ঠিক আঠাশ দিন পরে দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হবে। দ্বিতীয় ডোজ় পাওয়ার দু’সপ্তাহের মাথায় শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়া শুরু হবে বলে দাবি স্বাস্থ্যকর্তাদের। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়ালের কথায়, ‘‘দুটি ডোজ়ের ক্ষেত্রে নজরদারি খুব প্রয়োজন। কোনও ব্যক্তিকে যে সংস্থার প্রথম ডোজ় দেওয়া হল, তিনি যাতে সেই সংস্থার দ্বিতীয় ডোজ় পান সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।’’ সেই কারণে ব্যক্তি-পিছু নজরদারি ভীষণ প্রয়োজন বলেই তাঁর মত। তাই টিকাকরণ চলাকালীন ‘রিয়্যাল টাইম’ তথ্য সংগ্রহ করে কো-উইন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনে আপলোডে বিশেষ করে জোর দিয়েছে সরকার। নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ভি কে পল বলেন, ‘‘প্রথম দফার টিকাকরণ শেষ হতেই প্রতিষেধকপ্রাপ্তরা এসএমএস পাবেন। দ্বিতীয় দফা শুরু হওয়ার আগে ফের এসএমএস করে নির্দিষ্ট দিন ও সময় জানিয়ে দেওয়া হবে, কারণ কেউ দু’টি ডোজ় না-নিলে গোটা পরিকল্পনাটিই ভেস্তে যাবে।’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement