করোনা মোকাবিলায় ১৫ হাজার কোটি টাকা মঞ্জুর করল কেন্দ্র।—ছবি পিটিআই।
দেশে কোভিড-১৯ রোগাক্রান্তের সংখ্যা ছ’হাজারের কাছাকাছি। এই পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির জন্য আজ ১৫ হাজার কোটি টাকা মঞ্জুর করল কেন্দ্র। করোনা সংক্রমণ রুখতে ব্যবস্থাপনায় খামতি থেকে যাওয়ায় ৯টি রাজ্যের পরিস্থিতি নজরদারির জন্য ১০টি দল গঠন করেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
করোনা মোকাবিলায় মোদী সরকারের বরাদ্দ অর্থ সন্তুষ্ট করতে পারেনি বিরোধীদের। তাঁদের অভিযোগ, ওই অর্থ প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়।
কেন্দ্রের তরফে আজ জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৫৪৯। করোনার সার্বিক চিত্র বিশ্লেষণ করে কেন্দ্র মনে করছে, ৯টি রাজ্যের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, গুজরাত ও বিহারকে সাহায্যের জন্য কেন্দ্র ১০টি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন দল গঠন করেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল জানান, কী ভাবে সংক্রমণকে ছোট গণ্ডিতে বেঁধে রাখা সম্ভব, হাসপাতালগুলির প্রস্তুতি কী ভাবে হবে— সেই বিষয়গুলি নিয়ে রাজ্যকে পরামর্শ দেবে ওই দলগুলি।
লকডাউনের ঘোষণার দিন প্রধানমন্ত্রী রাজ্যগুলিকে আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। লকডাউনের ১৫ দিনের মাথায় ওই আর্থিক প্যাকেজ দেওয়ার কথা জানাল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। ওই অর্থ কী ভাবে ও কোন খাতে ব্যবহার করা হবে, মন্ত্রক তার শর্ত ঠিক করে দিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড হেল্থ সিস্টেম প্রিপেয়ার্ডনেস প্যাকেজ’টি কেন্দ্রীয় প্রকল্প। যার মেয়াদ পাঁচ বছরের ও তিনটি পর্বে তা রূপায়িত করতে হবে রাজ্যগুলিকে। প্রথম পর্বের মেয়াদ গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত। এই পর্বটিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে কেন্দ্র। এই পর্বেই মোট টাকার অর্ধেক অর্থাৎ প্রায় ৭৭৭৪ কোটি টাকা খরচ হবে, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে করোনা রোগীদের চিকিৎসা ও পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে। দ্বিতীয় পর্বের মেয়াদ আগামী জুলাই থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত। শেষ পর্ব রূপায়িত করতে হবে আগামী এপ্রিল থেকে ২০২৪-এর মার্চের মধ্যে। শেষ দুই পর্বে স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকাঠামো উন্নয়নে টাকা ব্যবহার করতে হবে।
লব আগরওয়াল বলেন, ‘‘প্রথম পর্বের টাকা দেওয়া হচ্ছে মূলত করোনার জন্য পৃথক হাসপাতাল ও আইসোলেশন ব্লক নির্মাণ বা পরিকাঠামোগত উন্নয়নে। আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর এবং এন৯৫ মাস্ক কেনা, নতুন পরীক্ষাগার গড়া, বর্তমান পরীক্ষাগারের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ছাড়াও সংক্রমিতদের নজরদারি বা সচেতনতা বাড়ানোর কাজেও।’’
কেন্দ্রের ঘোষিত আর্থিক প্যাকেজ কম বলে সরব বিরোধীরা। কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত রাজপথের আশপাশের এলাকা পুনর্গঠন বা ‘সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রজেক্ট’-এ নতুন সংসদ ভবন তৈরি হবে। তার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। আর করোনা মোকাবিলায় বরাদ্দ ১৫ হাজার কোটি! প্রতিটি রাজ্যের ভাগে তা হলে কত টাকা পড়ল?’’ রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ওব্রায়েন বলেন, ‘‘অতীতের ৩৬ হাজার কোটি ও বর্তমানের ২৫ হাজার কোটি অর্থাৎ মোট ৬১ হাজার কোটি টাকা আগে মেটাতে হবে কেন্দ্রকে। দ্বিতীয়ত, রাজ্যের নিজস্ব ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বাড়াতে এফআরবিএম -এর সীমা বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হোক। তৃতীয়ত, প্রধানমন্ত্রী যে ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, তা জিডিপি-র ১ শতাংশ। ওই প্যাকেজ বাড়িয়ে অন্তত জিডিপির ৫ শতাংশ করা হোক।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)