ছবি: সংগৃহীত।
টানা তিন সপ্তাহের ঘরবন্দির সময়ে খাদ্যপণ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জোগান অব্যাহত রাখাই নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আজ রেশন দোকানের মাধ্যমে মাথা পিছু ২ কেজি করে বাড়তি চাল বা গম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারের দাবি, এতে ৮০ কোটি মানুষ উপকৃত হবেন।
আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা দোকানদার, ছোট ব্যবসায়ী, ই-কমার্স ও বড় মাপের খুচরো ব্যবসায়ী সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক করেন। কাল রাতে মোদী লকডাউন ঘোষণার পরেই দেশ জুড়ে আতঙ্ক ছড়ায়। জিনিস কিনতে দোকানে ভিড় জমায় জনতা। আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, “আতঙ্কিত হয়ে কেনাকাটার প্রয়োজন নেই। ২১ দিনই খাদ্য ও প্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ অব্যাহত থাকবে।’’
সরকারি কর্তারা বলছেন, খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের জোগান অব্যাহত রাখার উপরে দেশের গরিব মানুষ, দিনমজুর এবং চাষিদের ভাগ্যও জড়িয়ে। তাঁদের ব্যাখ্যা, সমস্যা মূলত তিনটি। এক, এখন রবি ফসল কাটার সময়। কিন্তু লকডাউনের জেরে মাঠের ফসল মাঠেই পড়ে। ফসল কাটার মজুরও মিলছে না। কিছু ফসল কাটা হলেও চাষিরা বেচতে পারছেন না। কারণ মান্ডিগুলো ঠিকমতো কাজ করছে না। ফলে ফসল নষ্টের আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে খাদ্যশস্যের জোগানে টান পড়বে।
দুই, লকডাউনের জেরে কাজ বন্ধ হওয়ায় শহরের দিনমজুরদের রুটিরুজিতে টান পড়েছে। তাঁরা নিজেদের গ্রামে ফিরতে চাইছেন। কিন্তু নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের জোগান বজায় রাখতে শ্রমিকদের দরকার হবে।
তিন, লকডাউনের জেরে গ্রামে একশো দিনের কাজও প্রায় বন্ধ। ফলে শহর থেকে গ্রামে ফেরা শ্রমিকদেরও সুরাহা হচ্ছে না। আজ কংগ্রেস ফের দাবি তুলেছে, তাদের ঘোষণা করা ‘ন্যায়’ প্রকল্পের পথে হেঁটে গরিবদের নগদ ৭,৫০০ টাকা করে দেওয়া হোক। রাহুল গাঁধী বলেন, “দিনমজুরদের এখনই সহায়তা চাই। ওদের অ্যাকাউন্টে নগদ দেওয়া হোক। ব্যবসা থমকে যাওয়ার কারণে কর ছাড়, আর্থিক সহায়তা দেওয়া হোক, যাতে কারও চাকরি না-যায়। গরিবদের ফ্রি রেশন দেওয়া হোক।”
বিনা পয়সায় রেশনের বন্দোবস্ত না-হলেও মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, খাদ্য সুরক্ষা আইনে মাসে মাথাপিছু ৫ কেজির বদলে ৭ কেজি খাদ্যশস্য দেওয়া হবে। ২ টাকা কেজি দরে গম, ৩ টাকা কেজি দরে চাল মিলবে। রাজ্যগুলি আগাম তিন মাসের খাদ্যশস্য খাদ্য নিগম থেকে তুলতে পারবে। কিন্তু কেন্দ্র গরিবদের হাতে সরাসরি টাকা তুলে দেবে কি না, সে প্রশ্নের জবাব মেলেনি। জাভড়েকর বলেন, “কেন্দ্র বিষয়টি দেখছে।”