ছবি পিটিআই।
লকডাউন শিথিল হতেই করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষা বলছে, মোট সংক্রমিতের নিরিখে ব্রিটেনকে পেরিয়ে বিশ্ব-তালিকায় আজ চার নম্বরে উঠে এসেছে ভারত। তা সত্ত্বেও দেশে গোষ্ঠী-সংক্রমণের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে ফের দাবি করল কেন্দ্র। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর প্রধান বলরাম ভার্গব এ দিন দাবি করেন, কন্টেনমেন্ট জ়োনে সংক্রমণের হার সামান্য বেশি হলেও সার্বিক ভাবে ভারতে কোভিড-১৯ এখনও গোষ্ঠী-সংক্রমণের পর্যায়ে পৌঁছয়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, গত কালের মতো আজও দেশে অ্যাক্টিভ করোনা রোগীর চেয়ে সুস্থ হয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যাটা বেশি। সুস্থের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছেও।
গত কালই দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন বলেছিলেন, রাজধানীতে সম্ভবত গোষ্ঠী-সংক্রমণ শুরু হয়েছে। আজ দিল্লিতে ১৮৭৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত ৬৫ জন। কিন্তু আইসিএমআর-এর প্রধান ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের ৮৩টি জেলার ‘সেরো সার্ভে’ রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে জানিয়েছেন, ওই জেলাগুলির মোট ২৬,৪০০ মানুষের মধ্যে মাত্র ০.৭৩ শতাংশের করোনার উপসর্গ রয়েছে। শহরাঞ্চলে সংক্রমণের হার ১.০৯ শতাংশের কাছাকাছি, শহরের বস্তি অঞ্চলে ১.৮৯ শতাংশ।
নীতি আয়োগ সদস্য (স্বাস্থ্য) ভি কে পল বলেন, ‘‘কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিতে সংক্রমণের হার বেশি। যা রুখতে রাজ্যগুলিকেও প্রয়োজনে আরও সক্রিয় হতে হবে।’’
আরও পড়ুন: উদ্বেগ বাড়িয়ে কোভিডের পাশাপাশি ডেঙ্গি হানা রাজ্যে
এমসের প্রাক্তন ডিরেক্টর এম সি মিশ্রের অবশ্য প্রশ্ন, ‘‘গোষ্ঠী-সংক্রমণ না-হলে রোজ প্রায় ১০ হাজার জন করোনা-আক্রান্ত হচ্ছেন কী করে? তাঁদের সংক্রমণের উৎস কি জানা যাচ্ছে?’’ গত চব্বিশ ঘণ্টায় দেশে রেকর্ড ৯,৯৯৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন ৩৫৭ জন। কিন্তু ১৩০ কোটির দেশে ওই সংখ্যা (মোট আক্রান্ত ২,৮৬,৫৭৯ জন, মোট মৃত ৮১০২ জন) নগণ্য বলেই দাবি স্বাস্থ্যকর্তাদের। আইসিএমআর-এর মতে, ভারতে প্রতি লক্ষ জনসংখ্যায় মৃত্যুহার ০.৫৯ শতাংশ— বিশ্বে সবচেয়ে কম।
আরও পড়ুন: নিয়ন্ত্রণরেখায় বাড়তি সেনা ও ভারী অস্ত্র মোতায়েন করেছে চিন!
স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, মৃত্যুহার কম হওয়া এবং আক্রান্তের চেয়ে সুস্থের সংখ্যা বাড়তে থাকাটা ইতিবাচক লক্ষণ। এখন দেশে অ্যাক্টিভ করোনা রোগীর সংখ্যা ১,৩৭,৪৪৮। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১,৪১,০২৮ জন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়ালের মতে, পরিসংখ্যান বুঝিয়ে দিচ্ছে, করোনা মোকাবিলায় ভারত ঠিক পথেই এগোচ্ছে। তবে রোগীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে ভার্গব বলেছেন, ‘‘বর্তমানে রোজ দেড় লক্ষ নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। তা বাড়িয়ে দু’লক্ষ করা হচ্ছে।’’