হাসপাতাল ছেড়ে বেরোচ্ছেন শতবর্ষী সন্দিকৈ। —নিজস্ব চিত্র
গত বছরই একশো ছুঁয়েছিলেন তিনি। জন্মদিনের সেই উৎসবের পরে ফের যে একটা উৎসব হবে তাঁকে ঘিরে— ভাবতে পারেননি মাই সন্দিকৈ।
অথচ কয়েক দিন আগেও পরিবেশ ছিল আশঙ্কার। গুয়াহাটির মাদার্স ওল্ড এজ হোমের পরিচালিকা মণিকা শর্মা জানান, সরকারের তরফেই আবাসিকদের কোভিড পরীক্ষা হয়। ৬৬ জন আবাসিকের মধ্যে ১২ জনের ফল পজ়িটিভ আসে। তাঁর মধ্যে ছিলেন ১০১ বছরের মাই সন্দিকৈয়ের।
এক মাত্র ছেলে মারা যাওয়ার পরে আদতে গোলাঘাটের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধা গুয়াহাটির এই বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দা। মহেন্দ্রমোহন চৌধুরী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। শতবর্ষ পার করা রোগীকে নিয়ে চিন্তায় ছিলেন ডাক্তার-নার্সরাও। শুধু চিন্তা ছিল না রোগীর নিজের। হাসিমুখে পার করেছেন চিকিৎসার সব ধাপ। সকলের কাছে হয়ে উঠেছিলেন আদরের ‘আইতা’।
শেষ পর্যন্ত ১০ দিনের মাথায় কোভিড পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে। ছুটি হওয়ার আগে হাসপাতালেই ছোট্ট অনুষ্ঠানে অসমের সব চেয়ে বয়স্ক কোভিড রোগীর সুস্থ হয়ে ফেরা উদযাপন করেন ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেখানেও মধ্যমণি তিনিই। একের পর এক জনপ্রিয় অসমিয়া গানে আসর মাতান মাই সন্দিকৈ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, ‘‘বয়স আর অসুখ তাঁর অদম্য ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মেনেছে। তাঁকে সেলাম জানাই, দীর্ঘায়ু কামনা করি।’’ বৃদ্ধাশ্রমের পরিচালক উৎপল হর্ষবর্ধন জানান, বৃদ্ধাশ্রমের ১২ জনই সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন। করোনা ও লকডাউনের জন্য এই বছর এখনও বৃদ্ধাশ্রমে কোনও উৎসব হয়নি। এ বার তাই করোনাজয়ী সকলকে নিয়ে একসঙ্গে উৎসব করার কথা ভাবা হচ্ছে।
অসমে মোট করোনা আক্রান্ত ৪৪৮২ জন পুলিশকর্মী-সহ ১,৫৫,৪৫৩ জন। মারা গিয়েছেন ২০ জন পুলিশকর্মী-সহ সাড়ে পাঁচশোর বেশি মানুষ। সুস্থতার হার ৮০.৭৫ শতাংশ। পজ়িটিভিটি রেট ৭.৩৮ শতাংশ। কাল থেকে রাজ্যে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য খুলছে স্কুল। সেপ্টেম্বরের প্রথম থেকেই শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা স্কুলে হাজিরা দিচ্ছিলেন। সব স্কুল স্যানিটাইজ় করা হয়েছে। দূরত্ববিধি মেনে শ্রেণিকক্ষ সাজানো হয়েছে। অভিভাবকদের অনুমতি সাপেক্ষে ছাত্রছাত্রীরা নির্দিষ্ট সংখ্যায় স্কুলে আসবে। তবে ৪ এপ্রিল থেকে বকেয়া থাকা বড়ো স্বশাসিত পরিষদের নির্বাচন করোনার জন্য অনির্দিষ্ট কাল স্থগিত রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছে রাজ্য সরকার।