ছবি: পিটিআই।
সপ্তাহ খানেক আগে ইটালি থেকে কেরলে ফিরেছিলেন একই পরিবারের তিন জন। স্বামী-স্ত্রী ও তাঁদের ২৬ বছরের ছেলে। বিমানবন্দরের কর্মীদের তাঁরা জানানওনি যে ইটালি থেকে ফিরছেন। ফলে বিমানবন্দরে থার্মাল পরীক্ষাও হয়নি ওই তিন জনের। বাড়ি ফেরার পরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান তাঁরা। সেখানে তাঁদের জ্বর-সর্দি-কাশি দেখে ওই আত্মীয়েরা হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ধরা পড়ে, ওই তিন জনই ইটালি থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে দেশে ফিরেছেন। আজ সংবাদমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা। ওই তিন জনের সঙ্গে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের দুই বৃদ্ধ আত্মীয়ও। এর ফলে ভারতে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯।
কেরলের পথনামথিট্টা জেলার রান্নি গ্রামের বাসিন্দা ওই ৫ জন। সেখানকার হাসপাতালেই আপাতত আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা চলছে তাঁদের। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল।
কোভিড-১৯ নিয়ে দেশে আতঙ্ক ক্রমশ বাড়ছে। গোয়া এখন কার্যত পর্যটক শূন্য। খাঁ খাঁ করছে সব হোটেল আর রিসর্ট। তবে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়ার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলির সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেছেন। এত দিন দেশের ৫২টি পরীক্ষাগারে এই ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছিল। এর সঙ্গে আরও ৫৭টি পরীক্ষাগার যোগ করা হচ্ছে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল আজ জানিয়েছেন, ২৫টি হাসপাতালে ১৬৮টি আইসোলেশন শয্যা তৈরি রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি, দিল্লির প্রতিটি বাস ও মেট্রোকে নিয়মিত জীবাণুমুক্ত রাখারও চেষ্টা করা হচ্ছে। কেজরীবাল সরকারের নির্দেশ, কারও আত্মীয় বা প্রতিবেশী সম্প্রতি বিদেশ থেকে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়লে, অবিলম্বে সেই তথ্য যেন স্বাস্থ্য মন্ত্রকে জানানো হয়।
আরও পড়ুন: রক্ষাকর্তা মহেন্দ্রকে ভুলবে না গোকুলপুরী
ইরানে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরানোর বিষয়টি নিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের সাহায্য চাইলেন এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার। আজ একটি টুইটে পওয়ার জানিয়েছেন, ইরানে ৪০ জনেরও বেশি ভারতীয় আটকে রয়েছেন। তাঁদের এই মুহূর্তে সাহায্য প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে তিনি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানিয়েছেন এনসিপি প্রধান। করোনার ভয়ে করমর্দন ছেড়ে প্রধানমন্ত্রীর দেখানো ‘নমস্তে’-র পথে চলার পরামর্শ দিয়েছেন আর এক এনসিপি নেতা অজিত পওয়ার। মহারাষ্ট্র সরকার আজ জানিয়েছে, করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২৫৮ জনকে আজ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কারও শরীরেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ মেলেনি। ১৫ জনকে এখনও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। গুজরাতের হাসপাতালেও ৪৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। তাঁদের কারও শরীরেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ মেলেনি।
এখন নাওয়া-খাওয়া ভুলে ২৪ ঘণ্টাই পরীক্ষাগারে কাটাতে হচ্ছে পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিউট অব ভাইরোলজি (এনআইভি)-র বিজ্ঞানীদের। শরীর ঢাকা পোশাক, বিশেষ চশমা, মাস্ক আর দস্তানা পরে টানা কাজ করে যেতে হচ্ছে তাঁদের। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর এক কর্তা জানালেন, গত মাসে গোটা দেশ থেকে ৪০০০ নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে এনআইভি-তে প্রতিদিন ২৫টি করে নুমনা পরীক্ষা করা হয়েছে।