ফাইল চিত্র।
সংক্রমণ নিয়ে সতর্ক থাকার জন্য নিরন্তর দাওয়াই দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তিনি সংসদের অধিবেশন বন্ধ করতে নারাজ। মোদীর পরামর্শেই বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা আজ ঘোষণা করেন, আগামী এক মাস বিজেপি কোনও ধর্না, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ কর্মসূচি নেবে না। স্মারকলিপি দিতে হলে চার-পাঁচ জন নেতা যাবেন। বড় জমায়েত নৈব নৈব চ।
এর পরেই প্রশ্ন উঠেছে, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব যখন বড় জনসমাগম এড়াতে বলছেন, তখন অযোধ্যায় রামনবমী মেলা আয়োজনের অনুমতি দিচ্ছে কেন যোগী আদিত্যনাথের সরকার? কেনই বা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) ‘রাম মহোৎসব’ও বন্ধ করা হচ্ছে না? যেটি চলবে ২৫ মার্চ থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত।
করোনা-কারণে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে শিক্ষাঙ্গন থেকে ক্রীড়াঙ্গন, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা থেকে আদালত, আইনসভা— ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। কিন্তু বিজেপি দলীয় কর্মসূচি এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণের কথা জানিয়েছে। বিরোধীদের প্রশ্ন, তা হলে কি করোনা নিয়ে বিজেপি আরও বেশি আতঙ্কিত? তা সত্ত্বেও ভিএইচপি-র কর্মসূচি ও রামনবমী মেলায় রাশ টানা হচ্ছে না কেন।
গেরুয়া শিবিরের যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টে অযোধ্যা রায় ঘোষণার পরে কোথাও কোনও উৎসব পালন না-করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রামনবমীতে এ বারে বাড়তি আড়ম্বরের আশা করেছিলেন সঙ্ঘ নেতারা। সঙ্ঘের এক নেতার কথায়, ‘‘করোনা আবহে হিন্দুদের যদি আসতে না-ও বলা হয়, তা তারা শুনবে না। ফলে আড়ম্বর কাটছাঁটের চেষ্টা হচ্ছে। যাতে লোকের সংখ্যা কম হয়।’’ ভিএইচপি নেতা বিনোদ বনশলের যুক্তি, ‘‘প্রায় পৌনে তিন লক্ষ গ্রাম থেকে অযোধ্যার মন্দিরের জন্য শিলা এসেছিল, সেখানে অনুষ্ঠানের ঘোষণা অনেক আগেই হয়েছে। অযোধ্যায় রামনবমী মেলায় নিষেধ করলেও ভক্তেরা আসবেন।’’ তাঁর তির্যক মন্তব্য, ‘‘কুম্ভের সময়েও এ ধরনের প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু সব নির্বিঘ্নেই হয়েছে।’’ রামনবমী মেলা নিয়ে ২০ মার্চ বৈঠকে বসার কথা যোগী প্রশাসনের।
করোনা প্রতিরোধের অন্যতম উপায় জমায়েত করতে না-দেওয়া। এ ক্ষেত্রে ‘শত্রু’ অদৃশ্য এবং প্রাণের সংশয় রয়েছে। এ নিয়ে বনশলের যুক্তি, ‘‘ঠিকই। কিন্তু ভক্তিরও শক্তি আছে।’’