প্রতীকী ছবি।
ত্রিপুরার অ্যাডভোকেট জেনারেল অরুণকান্তি ভৌমিকের মৃত্যু হল কলকাতায়। কিছু দিন ধরেই কঠিন রোগে ভুগছিলেন তিনি। প্রথমে আগরতলা ইন্ধিরা গাঁধী মেমোরিয়াল হাসপাতাল এবং পরে আইএলএস হাসপাতালে চিকিৎধীন ছিলেন। গত কাল শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। গত কাল রাত থেকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সেখানে আজ ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়। শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় কলকাতার নিমতলা শ্মশানে।
অরুণবাবুর মৃত্যুতে ত্রিপুরার চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে। গত ১৬ তারিখ ইন্ধিরা গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করার সময় কোভিড-রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল অরুণবাবুর। দু’দিন পরে আগরতলা আইএলএস হাসপাতালেও কোভিড-১৯ পরীক্ষা হয় এবং সে বারও রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এর পর ২০ তারিখ কলকাতার হাসপাতালে তাঁর কোভিড-পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তত ক্ষণে তাঁর শারীরিক অবস্থার খুবই অবনতি ঘটে গিয়েছে। অরুণবাবুর ভাই অজিত ভৌমিক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, “এটা কী করে সম্ভব? ত্রিপুরায় স্বাস্থ্য পরিষেবার মান কি অবস্থায় রয়েছে, এ থেকেই তা সহজেই অনুমান করা যায়।”
রাজ্যের করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতা এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অব্যবস্থার অভিযোগ ওঠায় গত ১১ সেপ্টেম্বর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা শুরু করেছে ত্রিপুরা উচ্চ আদালত। তার বিচার চলছে প্রধান বিচারপতি আকিল কুরেশি ও বিচারপতি শুভাশিস তলাপাত্রের ডিভিশন বেঞ্চে। রাজ্য সরকারের পক্ষে অ্যাডভোকেট জেনারেল অরুণবাবুই মামলাটি লড়ছিলেন। পরের শুনানি হওয়ার কথা ৭ ডিসেম্বর।
ষাটের দশক থেকে আইনের পেশায় ছিলেন অরুণবাবু। বড়জলা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়কও নির্বাচিত হয়েছিলেন। ত্রিপুরা বার অ্যাসোসিয়েশন ও হাইকোর্ট বারের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন। বিজেপি-আইপিএফটি সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ২০১৮ সালে তিনি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
তাঁর মৃত্যুতে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব, সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা শোক প্রকাশ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী টুইট বার্তায় বলেছেন, “রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল এবং অত্যন্ত সুহৃদয় ব্যক্তি অরুণকান্তি ভৌমিকের প্রয়াণে আমি অত্যন্ত ব্যথিত।”
ত্রিপুরার উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা এবং শিক্ষা তথা আইনমন্ত্রী রতনলাল নাথ অ্যাডভোকেট জেনারেলের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেন।