Coronavirus in India

৮৪ হাজার সংক্রমণে প্রশ্ন আনলক ঘিরে

এখন যখন সংক্রমণ প্রতি দিন লাফ দিয়ে বাড়ছে, তখন গোটা দেশের তালা খুলে দেওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:০৭
Share:

ছবি এএফপি।

দেশে ফি-দিনের সংক্রমণ পৌঁছে গিয়েছে আশি হাজারের ঘরে। যে কোনও মুহূর্তে মোট সংক্রমণের বিশ্ব-তালিকায় ব্রাজিলকে টপকে দু’নম্বরে উঠে আসতে পারে ভারত। এই পরিস্থিতিতে ‘আনলক-৪’ পর্বে প্রথমে মেট্রো রেল ও তার পরে লোকাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। প্রশ্ন উঠেছে, দেশে সংক্রমণ কম থাকার সময়ে টানা লকডাউন করে সব বন্ধ রাখা হয়েছিল। এখন যখন সংক্রমণ প্রতি দিন লাফ দিয়ে বাড়ছে, তখন গোটা দেশের তালা খুলে দেওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত?

Advertisement

এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণের যুক্তি, ‘‘জীবন গুরুত্বপূর্ণ ঠিকই, কিন্তু জীবিকাও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। সেই কারণেই ধাপে ধাপে গোটা দেশকে লকডাউন-মুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছে সরকার।’’ তবে খোদ স্বাস্থ্যসচিবই সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মেলনে আজ মেনে নিয়েছেন যে, দেশে সংক্রমণ ক্রমশ বাড়ছে। প্রথমে ষাট হাজার, তার পরে সত্তর হাজারের ঘর পেরিয়ে আজ তা ৮৪ হাজার ছুঁইছুঁই করছে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৮৩,৮৮৩ জন, যা গত কালের থেকে প্রায় পাঁচ হাজার বেশি। সরকারি হিসেবে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৮.৫৩ লক্ষ হলেও ‘ওয়ার্ল্ডোমিটার্স’-এর আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় তা ৩৯.২৪ লক্ষে পৌঁছেছে। ওই সমীক্ষা বলছে, ব্রাজিলে আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ লক্ষ। এক নম্বরে থাকা আমেরিকায় ৬৩ লক্ষ।

স্বাস্থ্য মন্ত্রক অবশ্য জানিয়েছে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে ৬৮ হাজার মানুষ সুস্থও হয়েছেন। দৈনিক আক্রান্তের মতো দৈনিক সুস্থের সংখ্যাও বাড়ছে। অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা যেখানে সরকারি হিসেবে ৮.১৫ লক্ষ, সেখানে মোট সুস্থের সংখ্যা ২৯.৭০ লক্ষ, আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় যা ৩০ লক্ষ পেরিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত অবশ্য হাজারের বেশি।

Advertisement

আরও পড়ুন: গত দু’মাসের মধ্যে সংক্রমণের হার সর্বনিম্ন, সুস্থতার হার ৮৪.০২ শতাংশ

দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য মূলত পাঁচটি রাজ্যের দিকে আঙুল তুলেছে কেন্দ্র। সেগুলি হল— মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ু। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব ভূষণ বলেন, ‘‘ওই পাঁচটি রাজ্যে গোটা দেশের ৬২ শতাংশ রোগীর বাসস্থান। তবে আশার কথা হল, গত তিন সপ্তাহের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ওই পাঁচটি রাজ্যেই সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছে।’’ গত চব্বিশ ঘণ্টায় গোটা দেশে রেকর্ড সংখ্যক ১১ লক্ষেরও বেশি পরীক্ষা করা করা হয়েছে। ভূষণের কথায়, ‘‘এত বেশি পরীক্ষা সত্ত্বেও দেখা গিয়েছে, দেশে সংক্রমণের হার ৭.২ শতাংশ।’’ আপাতত ওই পাঁচটি রাজ্যে সংক্রমণের হার দশের নীচে নামানোই লক্ষ্য কেন্দ্রের।

আরও পড়ুন: রাশিয়ায় স্যালুটের জবাবে করজোড়ে নমস্তে রাজনাথের

রাতে জানা যায়, ৯ সেপ্টেম্বর থেকে দিল্লির হোটেল, রেস্তরাঁ, বার, ক্লাবগুলিতে মদ পরিবেশন করা হবে। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফলাফল দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে। আনলকে এত তাড়া কিসের? ভূষণের বক্তব্য, ‘‘গোড়ায় করোনার বিরুদ্ধে লড়ার ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত খামতি ছিল। তাই লকডাউন করা হয়েছিল। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার পরেই ধাপে ধাপে লকডাউন তোলা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement